ভূমিকা
যোহন তাঁর সুসমাচার লিপিবদ্ধ করার সময় প্রধানত, দুটি বিষয় স্মরণে রেখেছিলেন। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র, এই সত্য প্রমাণ করা এবং তাঁকে বিশ্বাস করে পরিত্রাণ লাভ করার জন্য সব মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো। (20:20-31) প্রভু যীশুর ঈশ্বরত্ব সম্পর্কে তাঁর সাক্ষ্য-প্রমাণ ত্রিবিধ: (1) তাঁর কথিত বচন (2) তাঁর পরিচিতজনেদের সাক্ষ্যদান এবং সর্বোপরি (3) তাঁর কৃত চিহ্নকাজসমূহ।
যোহনের সুসমাচারে পরিলক্ষিত হয় প্রভু যীশুর শিক্ষাদান, পরাক্রমসহ তাঁর কাজ সাধন এবং তিনি যা বলেন ও করেন, তার প্রতি জনসাধারণের সাড়াদান। সাতজন সাক্ষী ঘোষণা করেছেন যে, তিনি ছিলেন ঈশ্বরের পুত্র: বাপ্তিষ্মদাতা যোহন (1:34); নথনেল (1:49); পিতর (6:69); একজন ব্যক্তি, যে অন্ধ ছিল, কিন্তু যীশু যাকে দৃষ্টিশক্তি দান করেছিলেন (9:35-38); মার্থা (11:27); থোমা (20:28) এবং প্রেরিতশিষ্য যোহন। (21:24) প্রভু যীশুও স্বয়ং তাঁর ঈশ্বরত্বের কথা প্রকাশ করেছেন।
মথি ইহুদিদের জন্য, মার্ক রোমীয়দের জন্য ও লূক গ্রিকদের জন্য সুসমাচার লিখেছিলেন। যোহন কিন্তু সুসমাচার লিপিবদ্ধ করার সময় সমস্ত বিশ্বের কথা স্মরণে রেখেছেন। তাই তিনি বারবার “জগৎ” শব্দটি ব্যবহার করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি একশো বারেরও বেশি পুরোনো নিয়মের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ উল্লেখ করেছেন। এর মাধ্যমে অবগত হওয়া যায় যে, তিনি ইহুদি পাঠকদের সম্বন্ধেও সচেতন ছিলেন।
অন্য তিনটি সুসমাচারের আমন্ত্রণবাণী হল, “এসো ও শোনো।” কিন্তু যোহনের সুসমাচারের আমন্ত্রণবাণী হল, “এসো ও দেখো।” সাতষট্টি বার এই সুসমাচারে দেখবার বিষয় এবং 58 বার শোনবার বিষয় উল্লিখিত আছে। তাঁর কার্যাবলি ও উপদেশ প্রমাণ করে যে, তিনি প্রকৃতই ছিলেন ঈশ্বরের পুত্র।
ভূমিকা উপস্থাপনের পরে (1:1-18) যোহন খ্রীষ্টের পরিচর্যা: ইহুদিদের কাছে (1:19–12:50), তাঁর শিষ্যদের কাছে (13–17) এবং পরে সমস্ত বিশ্বের কাছে (18–21) ব্যক্ত করেছেন। প্রথম অংশে তিনি একজন অলৌকিক কাজ-সম্পাদনকারী, দ্বিতীয় অংশে তিনি একজন শিক্ষক এবং তৃতীয় অংশে তিনি একজন বিজয়ী ব্যক্তিরূপে চিত্রিত হয়েছেন। অবশ্য, সমস্ত সুসমাচারটিতেই তিনি প্রভু ও পরিত্রাতারূপে উপস্থাপিত হয়েছেন।
রচয়িতা: যোহন (নামটির অর্থ, সদাপ্রভু করুণাময়)
রচনার স্থান: ইফিষ নগর
রচনাকাল: আনুমানিক 90 খ্রীষ্টাব্দ
মূল বিষয়বস্তু: মশীহ (খ্রীষ্ট), ঈশ্বরের পুত্র