প্রেরিতদের কার্য্য-বিবরণ 10
10
পিতর ও কর্ণীলিয়াস
1কৈসরিয়ায় কর্ণীলিয়াস নামে একজন লোক ছিলেন; ইনি ছিলেন ইতালীয় বাহিনীর একজন সেনাপতি। 2তিনি ছিলেন ঈশ্বর ভক্ত, তাঁর গৃহস্থ সমস্ত পরিজন সত্যময় ঈশ্বরের উপাসনা করত। তিনি ইহুদীদের মধ্যে গরীব দুঃখীদের অর্থ দিতেন আর সবসময়ই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানাতেন। 3একদিন প্রায় তিনটের সময় এক দর্শনের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট দেখতে পেলেন যে ঈশ্বরের এক দূত তাঁর কাছে এসে বলছেন, “কর্ণীলিয়াস!”
4কর্ণীলিয়াস স্বর্গদূতের দিকে চেয়ে ভয় পেয়ে বললেন, “মহাশয়, আপনি কি চান?”
সেই স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, “কর্ণীলিয়াস তোমার প্রার্থনা ঈশ্বর শুনেছেন; গরীবদের তুমি যে সাহায্য কর, তা তিনি দেখেছেন। ঈশ্বর তোমায় স্মরণ করেছেন। 5তুমি যাফো শহরে লোকদের পাঠাও, সেখানে শিমোন নামে একজন লোক আছে, যার অপর নাম পিতর; তোমার লোকরা সেখানে গিয়ে তাকে এখানে নিয়ে আসুক। 6সে চামড়ার ব্যবসায়ী শিমোনের বাড়িতে আছে, সেই বাড়ি সমুদ্রের ধারে।” 7স্বর্গদূত কথা বলে চলে যাওয়ার পর কর্ণীলিয়াস দুজন কর্মচারীকে ও একজন সৈনিককে ডেকে পাঠালেন। ঈশ্বরভক্ত এই সৈনিকটি কাজে সাহায্য করার ব্যাপারে সব সময়ই কর্ণীলিয়াসের কাছে কাছে থাকত। 8এই তিন ব্যক্তির কাছে কর্ণীলিয়াস সব কিছু বুঝিয়ে তাদের যাফোতে পাঠালেন।
9পরের দিন তারা যখন যাফোর কাছাকাছি পৌঁছলো সেই সময়ে পিতর প্রার্থনা করার জন্য ছাদের উপর উঠে ছিলেন। বেলা তখন ভর দুপুর। 10পিতরের খিদে পেল এবং তিনি খেতে চাইলেন। নীচে লোকরা তখন পিতরের জন্য খাবার প্রস্তুত করছে, এমন সময় তিনি আবিষ্ট হলেন। 11তিনি দেখলেন আকাশ মুক্ত হয়েছে আর একটা কিছু নেমে আসছে। সেটা দেখতে একটা বড় চাদরের মত, তার চারটে খুঁট ধরে কেউ যেন তা মাটিতে নামিয়ে দিচ্ছে। 12তার মধ্যে পৃথিবীর সব রকমের পশু ও সরীসৃপ এবং আকাশের নানা রকমের পক্ষী রয়েছে। 13এরপর একটা রব পিতরকে বলল, “পিতর ওঠ, এদের মার এবং খাও।”
14পিতর বললেন, “প্রভু কখনই না! কারণ আমি কখনও কোন অশুদ্ধ বা অপবিত্র কিছু খাই নি।”
15তখন আবার এই রব শোনা গেল, “ঈশ্বর যা শুদ্ধ করেছেন তা তুমি ‘অশুদ্ধ’ বোলো না!” 16এইভাবে তিন বার ঘটে যাবার পর সেই চাদরটি আকাশে তুলে নেওয়া হল। 17পিতর যে দর্শন পেয়েছিলেন তার অর্থ কি হতে পারে তা যখন তিনি মনে মনে চিন্তা করছেন,
সেই সময় কর্ণীলিয়াসের পাঠানো ঐ লোকেরা শিমোনের বাড়ির খোঁজ করতে করতে বাড়ির ফটকে এসে হাজির হল। 18তারা জিজ্ঞেস করল, “শিমোন, যাঁর অপর নাম পিতর, তিনি কি এ বাড়িতে রয়েছেন?”
19পিতর তখনও সেই দর্শনের বিষয়ে চিন্তা করছেন, তখন আত্মা তাঁকে বললেন, “দেখ! তিন জন লোক তোমার খোঁজ করছে। 20তুমি উঠে নীচে যাও, বিনা দ্বিধায় তাদের সঙ্গে যাও, কারণ আমিই তাদের পাঠিয়েছি।” 21তখন পিতর নীচে গিয়ে সেই লোকদের বললেন, “দেখুন, আপনারা যাকে খুঁজছেন, আমিই সেই লোক। আপনারা এখানে কেন এসেছেন?”
22তারা বলল, “আমরা সেনাপতি কর্ণীলিয়াসের কাছ থেকে এসেছি। তিনি একজন ধার্মিক লোক, তিনি ঈশ্বরের উপাসনা করেন। ইহুদীদের কাছেও তিনি শ্রদ্ধার পাত্র। স্বর্গদূত কর্ণীলিয়াসকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন আপনাকে তাঁর বাড়ীতে আসতে আমন্ত্রণ দেওয়া হয়। আপনি কি বলবেন তা যেন তিনি শুনতে পান।” 23তখন পিতর তাদের ভেতরে নিয়ে গিয়ে রাতটা তাঁর ওখানে থাকার ব্যবস্থা করলেন।
পর দিন পিতর প্রস্তুত হয়ে সেই লোকদের সঙ্গে রওনা হয়ে গেলেন। যাফো থেকে কয়েকজন বিশ্বাসী ভাইও পিতরের সঙ্গে গেলেন। 24পরের দিন তাঁরা কৈসরিয়া শহরে এলেন। কর্ণীলিয়াস তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তিনি তাঁর আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তাঁর বাড়িতে ডেকেছিলেন।
25পিতর যখন ভেতরে গেলেন তখন কর্ণীলিয়াস এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন; আর উপুড় হয়ে পড়ে পিতরকে প্রণাম জানালেন। 26কিন্তু পিতর তাঁকে বললেন, “আহা, কি করছেন, উঠুন! আমি তো একজন সামান্য মানুষ মাত্র।” 27পিতর তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতে ভেতরে গিয়ে দেখলেন, সেখানে বহুলোক এসে জড়ো হয়েছে।
28পিতর তাঁদের বললেন, “আপনারা জানেন, অন্য জাতের লোকের সঙ্গে মেলামেশা করা বা তাদের বাড়ি যাওয়া ইহুদীদের পক্ষে বিধি-সম্মত কাজ নয়; কিন্তু ঈশ্বর আমাকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, কোন মানুষকে ‘অশুচি’ বা ‘অপবিত্র’ বলা ঠিক নয়। 29তাই আমাকে ডেকে পাঠান হল, আর আমি বিনা আপত্তিতে চলে এলাম। এখন আমি জানতে চাই আপনারা কি কারণে আমায় ডেকে পাঠিয়েছেন।”
30কর্ণীলিয়াস বললেন, “চারদিন আগে এই সময় আমি আমার ঘরে বসে প্রার্থনা করছিলাম বেলা তখন প্রায় তিনটে, সেই সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন, তাঁর গায়ে ছিল উজ্জ্বল পোশাক। 31তিনি বললেন, ‘কর্ণীলিয়াস তোমার প্রার্থনা গ্রাহ্য হয়েছে, আর তুমি গরীব দুঃখীদের যে সাহায্য কর তা-ও ঈশ্বর দেখেছেন। ঈশ্বর তোমাকে স্মরণ করেছেন; 32তাই তুমি যাফোয় কিছু লোক পাঠাও এবং শিমোন যাকে পিতর বলে তাকে এখানে নিয়ে এস। সমুদ্রের ধারে শিমোন নামে যে চামড়ার ব্যবসায়ী আছে, সে তার বাড়িতে আছে।’ 33তাই আমি সঙ্গে সঙ্গে আপনার কাছে লোক পাঠালাম; আর আপনি বড় অনুগ্রহ করে এখানে এসেছেন। এখন আমরা সকলে এখানে ঈশ্বরের সামনে আছি; প্রভু আপনাকে যে সব কথা বলতে আদেশ করেছেন আমরা সকলে তা শুনব।”
কর্ণীলিয়াসের বাড়িতে পিতরের কথা
34তখন পিতর বলতে শুরু করলেন, “এখন আমি সত্যি সত্যিই বুঝতে পেরেছি যে ঈশ্বর কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেন না। 35প্রত্যেক জাতির মধ্যে যে কেউ ঈশ্বরের উপাসনা করে ও ন্যায় কাজ করে, ঈশ্বর এমন লোকদের গ্রহণ করেন। 36তিনি ইস্রায়েলের লোকদের কাছে তাঁর সুসমাচার পাঠিয়েছিলেন। তিনি সেই সুসমাচারে জানালেন যে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমেই শান্তি লাভ হয়। তিনি সকলেরই প্রভু!
37“সমগ্র যিহূদাতে কি ঘটেছিল সে সব কথা আপনারা শুনেছেন। যোহন বাপ্তাইজক লোকেদের কাছে বাপ্তিস্মের কথা প্রচার করার পর গালীলে এই ঘটনাগুলি শুরু হয়। 38আপনারা সেই নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে শুনেছেন, শুনেছেন ঈশ্বর কিভাবে তাঁকে পবিত্র আত্মায় ও পরাক্রমের সঙ্গে অভিষেক করেছিলেন। যীশু সর্বত্র মানুষের মঙ্গল করে বেড়াতেন, আর যারা দিয়াবলের কবলে পড়ত তাদের তিনি মুক্ত করতেন, কারণ ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
39“যিহূদা ও জেরুশালেমে যীশু যা কিছু করেছেন, আমরা তা স্বচক্ষে দেখেছি, আমরা তার সাক্ষী। তারা তাঁকে কাঠের তৈরী এক ক্রুশে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে; 40কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যুর তিন দিনের মাথায় জীবিত করেছেন। ঈশ্বর লোকদের কাছে যীশুকে জীবিতরূপে দেখালেন। 41কিন্তু তিনি সবাইকে দেখা দেন নি। ঈশ্বর পূর্বেই সাক্ষীরূপে যাদের মনোনীত করেছিলেন, কেবল তারাই তাঁকে দেখতে পেয়েছিলেন, আমরাই সেইসব সাক্ষী! মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হবার পর আমরা যীশুর সঙ্গে পান-আহার করেছি;
42“আর তিনি আমাদের আদেশ দিলেন, যেন আমরা লোকদের মাঝে প্রচার করি আর সাক্ষ্য দিই যে তিনিই সেই ব্যক্তি, যাঁকে ঈশ্বর সমস্ত জীবিত ও মৃত সকলের বিচারকর্তা করে মনোনীত করেছেন। 43যে কেউ যীশুকে বিশ্বাস করবে, সে পাপের ক্ষমা পাবে। যীশুর নামে ঈশ্বর সেইসব লোকদের পাপ ক্ষমা করবেন। সমস্ত ভাববাদী বলে গেছেন যে এ সত্য।”
অইহুদীদের কাছে পবিত্র আত্মা এলেন
44পিতর যখন এইসব কথা বলছিলেন, তখন যারা সেখানে সেইসব কথা শুনছিল, তাদের সকলের ওপর পবিত্র আত্মা নেমে এলেন। 45ইহুদী সম্প্রদায় থেকে যে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা পিতরের সঙ্গে সেখানে এসেছিলেন তাঁরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেলেন, কারণ অইহুদীদের ওপরও পবিত্র আত্মার দান নেমে এল। 46কারণ তাঁরা ওদের নানা ভাষায় কথা বলতে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে শুনলেন। 47তখন পিতর বললেন, “কেউ কি এই লোকদের জলে বাপ্তাইজ করতে অস্বীকার করতে পারে? আমরা যেমন পবিত্র আত্মা পেয়েছি তারাও তো তেমনি পেয়েছে!” 48তখন তিনি যীশু খ্রীষ্টের নামে কর্ণীলিয়াস, তার পরিবারের লোকদের ও তাদের বন্ধুদের জলে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করতে আদেশ করলেন। এরপর তাঁরা পিতরকে তাঁদের সঙ্গে কিছু দিন থাকতে অনুরোধ করলেন।
Currently Selected:
প্রেরিতদের কার্য্য-বিবরণ 10: BERV
Highlight
Share
Copy
![None](/_next/image?url=https%3A%2F%2Fimageproxy.youversionapistaging.com%2F58%2Fhttps%3A%2F%2Fweb-assets.youversion.com%2Fapp-icons%2Fen.png&w=128&q=75)
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version
All rights reserved.
© 2001 Bible League International
প্রেরিতদের কার্য্য-বিবরণ 10
10
পিতর ও কর্ণীলিয়াস
1কৈসরিয়ায় কর্ণীলিয়াস নামে একজন লোক ছিলেন; ইনি ছিলেন ইতালীয় বাহিনীর একজন সেনাপতি। 2তিনি ছিলেন ঈশ্বর ভক্ত, তাঁর গৃহস্থ সমস্ত পরিজন সত্যময় ঈশ্বরের উপাসনা করত। তিনি ইহুদীদের মধ্যে গরীব দুঃখীদের অর্থ দিতেন আর সবসময়ই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানাতেন। 3একদিন প্রায় তিনটের সময় এক দর্শনের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট দেখতে পেলেন যে ঈশ্বরের এক দূত তাঁর কাছে এসে বলছেন, “কর্ণীলিয়াস!”
4কর্ণীলিয়াস স্বর্গদূতের দিকে চেয়ে ভয় পেয়ে বললেন, “মহাশয়, আপনি কি চান?”
সেই স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, “কর্ণীলিয়াস তোমার প্রার্থনা ঈশ্বর শুনেছেন; গরীবদের তুমি যে সাহায্য কর, তা তিনি দেখেছেন। ঈশ্বর তোমায় স্মরণ করেছেন। 5তুমি যাফো শহরে লোকদের পাঠাও, সেখানে শিমোন নামে একজন লোক আছে, যার অপর নাম পিতর; তোমার লোকরা সেখানে গিয়ে তাকে এখানে নিয়ে আসুক। 6সে চামড়ার ব্যবসায়ী শিমোনের বাড়িতে আছে, সেই বাড়ি সমুদ্রের ধারে।” 7স্বর্গদূত কথা বলে চলে যাওয়ার পর কর্ণীলিয়াস দুজন কর্মচারীকে ও একজন সৈনিককে ডেকে পাঠালেন। ঈশ্বরভক্ত এই সৈনিকটি কাজে সাহায্য করার ব্যাপারে সব সময়ই কর্ণীলিয়াসের কাছে কাছে থাকত। 8এই তিন ব্যক্তির কাছে কর্ণীলিয়াস সব কিছু বুঝিয়ে তাদের যাফোতে পাঠালেন।
9পরের দিন তারা যখন যাফোর কাছাকাছি পৌঁছলো সেই সময়ে পিতর প্রার্থনা করার জন্য ছাদের উপর উঠে ছিলেন। বেলা তখন ভর দুপুর। 10পিতরের খিদে পেল এবং তিনি খেতে চাইলেন। নীচে লোকরা তখন পিতরের জন্য খাবার প্রস্তুত করছে, এমন সময় তিনি আবিষ্ট হলেন। 11তিনি দেখলেন আকাশ মুক্ত হয়েছে আর একটা কিছু নেমে আসছে। সেটা দেখতে একটা বড় চাদরের মত, তার চারটে খুঁট ধরে কেউ যেন তা মাটিতে নামিয়ে দিচ্ছে। 12তার মধ্যে পৃথিবীর সব রকমের পশু ও সরীসৃপ এবং আকাশের নানা রকমের পক্ষী রয়েছে। 13এরপর একটা রব পিতরকে বলল, “পিতর ওঠ, এদের মার এবং খাও।”
14পিতর বললেন, “প্রভু কখনই না! কারণ আমি কখনও কোন অশুদ্ধ বা অপবিত্র কিছু খাই নি।”
15তখন আবার এই রব শোনা গেল, “ঈশ্বর যা শুদ্ধ করেছেন তা তুমি ‘অশুদ্ধ’ বোলো না!” 16এইভাবে তিন বার ঘটে যাবার পর সেই চাদরটি আকাশে তুলে নেওয়া হল। 17পিতর যে দর্শন পেয়েছিলেন তার অর্থ কি হতে পারে তা যখন তিনি মনে মনে চিন্তা করছেন,
সেই সময় কর্ণীলিয়াসের পাঠানো ঐ লোকেরা শিমোনের বাড়ির খোঁজ করতে করতে বাড়ির ফটকে এসে হাজির হল। 18তারা জিজ্ঞেস করল, “শিমোন, যাঁর অপর নাম পিতর, তিনি কি এ বাড়িতে রয়েছেন?”
19পিতর তখনও সেই দর্শনের বিষয়ে চিন্তা করছেন, তখন আত্মা তাঁকে বললেন, “দেখ! তিন জন লোক তোমার খোঁজ করছে। 20তুমি উঠে নীচে যাও, বিনা দ্বিধায় তাদের সঙ্গে যাও, কারণ আমিই তাদের পাঠিয়েছি।” 21তখন পিতর নীচে গিয়ে সেই লোকদের বললেন, “দেখুন, আপনারা যাকে খুঁজছেন, আমিই সেই লোক। আপনারা এখানে কেন এসেছেন?”
22তারা বলল, “আমরা সেনাপতি কর্ণীলিয়াসের কাছ থেকে এসেছি। তিনি একজন ধার্মিক লোক, তিনি ঈশ্বরের উপাসনা করেন। ইহুদীদের কাছেও তিনি শ্রদ্ধার পাত্র। স্বর্গদূত কর্ণীলিয়াসকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন আপনাকে তাঁর বাড়ীতে আসতে আমন্ত্রণ দেওয়া হয়। আপনি কি বলবেন তা যেন তিনি শুনতে পান।” 23তখন পিতর তাদের ভেতরে নিয়ে গিয়ে রাতটা তাঁর ওখানে থাকার ব্যবস্থা করলেন।
পর দিন পিতর প্রস্তুত হয়ে সেই লোকদের সঙ্গে রওনা হয়ে গেলেন। যাফো থেকে কয়েকজন বিশ্বাসী ভাইও পিতরের সঙ্গে গেলেন। 24পরের দিন তাঁরা কৈসরিয়া শহরে এলেন। কর্ণীলিয়াস তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তিনি তাঁর আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তাঁর বাড়িতে ডেকেছিলেন।
25পিতর যখন ভেতরে গেলেন তখন কর্ণীলিয়াস এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন; আর উপুড় হয়ে পড়ে পিতরকে প্রণাম জানালেন। 26কিন্তু পিতর তাঁকে বললেন, “আহা, কি করছেন, উঠুন! আমি তো একজন সামান্য মানুষ মাত্র।” 27পিতর তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতে ভেতরে গিয়ে দেখলেন, সেখানে বহুলোক এসে জড়ো হয়েছে।
28পিতর তাঁদের বললেন, “আপনারা জানেন, অন্য জাতের লোকের সঙ্গে মেলামেশা করা বা তাদের বাড়ি যাওয়া ইহুদীদের পক্ষে বিধি-সম্মত কাজ নয়; কিন্তু ঈশ্বর আমাকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, কোন মানুষকে ‘অশুচি’ বা ‘অপবিত্র’ বলা ঠিক নয়। 29তাই আমাকে ডেকে পাঠান হল, আর আমি বিনা আপত্তিতে চলে এলাম। এখন আমি জানতে চাই আপনারা কি কারণে আমায় ডেকে পাঠিয়েছেন।”
30কর্ণীলিয়াস বললেন, “চারদিন আগে এই সময় আমি আমার ঘরে বসে প্রার্থনা করছিলাম বেলা তখন প্রায় তিনটে, সেই সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন, তাঁর গায়ে ছিল উজ্জ্বল পোশাক। 31তিনি বললেন, ‘কর্ণীলিয়াস তোমার প্রার্থনা গ্রাহ্য হয়েছে, আর তুমি গরীব দুঃখীদের যে সাহায্য কর তা-ও ঈশ্বর দেখেছেন। ঈশ্বর তোমাকে স্মরণ করেছেন; 32তাই তুমি যাফোয় কিছু লোক পাঠাও এবং শিমোন যাকে পিতর বলে তাকে এখানে নিয়ে এস। সমুদ্রের ধারে শিমোন নামে যে চামড়ার ব্যবসায়ী আছে, সে তার বাড়িতে আছে।’ 33তাই আমি সঙ্গে সঙ্গে আপনার কাছে লোক পাঠালাম; আর আপনি বড় অনুগ্রহ করে এখানে এসেছেন। এখন আমরা সকলে এখানে ঈশ্বরের সামনে আছি; প্রভু আপনাকে যে সব কথা বলতে আদেশ করেছেন আমরা সকলে তা শুনব।”
কর্ণীলিয়াসের বাড়িতে পিতরের কথা
34তখন পিতর বলতে শুরু করলেন, “এখন আমি সত্যি সত্যিই বুঝতে পেরেছি যে ঈশ্বর কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেন না। 35প্রত্যেক জাতির মধ্যে যে কেউ ঈশ্বরের উপাসনা করে ও ন্যায় কাজ করে, ঈশ্বর এমন লোকদের গ্রহণ করেন। 36তিনি ইস্রায়েলের লোকদের কাছে তাঁর সুসমাচার পাঠিয়েছিলেন। তিনি সেই সুসমাচারে জানালেন যে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমেই শান্তি লাভ হয়। তিনি সকলেরই প্রভু!
37“সমগ্র যিহূদাতে কি ঘটেছিল সে সব কথা আপনারা শুনেছেন। যোহন বাপ্তাইজক লোকেদের কাছে বাপ্তিস্মের কথা প্রচার করার পর গালীলে এই ঘটনাগুলি শুরু হয়। 38আপনারা সেই নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে শুনেছেন, শুনেছেন ঈশ্বর কিভাবে তাঁকে পবিত্র আত্মায় ও পরাক্রমের সঙ্গে অভিষেক করেছিলেন। যীশু সর্বত্র মানুষের মঙ্গল করে বেড়াতেন, আর যারা দিয়াবলের কবলে পড়ত তাদের তিনি মুক্ত করতেন, কারণ ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
39“যিহূদা ও জেরুশালেমে যীশু যা কিছু করেছেন, আমরা তা স্বচক্ষে দেখেছি, আমরা তার সাক্ষী। তারা তাঁকে কাঠের তৈরী এক ক্রুশে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে; 40কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যুর তিন দিনের মাথায় জীবিত করেছেন। ঈশ্বর লোকদের কাছে যীশুকে জীবিতরূপে দেখালেন। 41কিন্তু তিনি সবাইকে দেখা দেন নি। ঈশ্বর পূর্বেই সাক্ষীরূপে যাদের মনোনীত করেছিলেন, কেবল তারাই তাঁকে দেখতে পেয়েছিলেন, আমরাই সেইসব সাক্ষী! মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হবার পর আমরা যীশুর সঙ্গে পান-আহার করেছি;
42“আর তিনি আমাদের আদেশ দিলেন, যেন আমরা লোকদের মাঝে প্রচার করি আর সাক্ষ্য দিই যে তিনিই সেই ব্যক্তি, যাঁকে ঈশ্বর সমস্ত জীবিত ও মৃত সকলের বিচারকর্তা করে মনোনীত করেছেন। 43যে কেউ যীশুকে বিশ্বাস করবে, সে পাপের ক্ষমা পাবে। যীশুর নামে ঈশ্বর সেইসব লোকদের পাপ ক্ষমা করবেন। সমস্ত ভাববাদী বলে গেছেন যে এ সত্য।”
অইহুদীদের কাছে পবিত্র আত্মা এলেন
44পিতর যখন এইসব কথা বলছিলেন, তখন যারা সেখানে সেইসব কথা শুনছিল, তাদের সকলের ওপর পবিত্র আত্মা নেমে এলেন। 45ইহুদী সম্প্রদায় থেকে যে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা পিতরের সঙ্গে সেখানে এসেছিলেন তাঁরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেলেন, কারণ অইহুদীদের ওপরও পবিত্র আত্মার দান নেমে এল। 46কারণ তাঁরা ওদের নানা ভাষায় কথা বলতে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে শুনলেন। 47তখন পিতর বললেন, “কেউ কি এই লোকদের জলে বাপ্তাইজ করতে অস্বীকার করতে পারে? আমরা যেমন পবিত্র আত্মা পেয়েছি তারাও তো তেমনি পেয়েছে!” 48তখন তিনি যীশু খ্রীষ্টের নামে কর্ণীলিয়াস, তার পরিবারের লোকদের ও তাদের বন্ধুদের জলে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করতে আদেশ করলেন। এরপর তাঁরা পিতরকে তাঁদের সঙ্গে কিছু দিন থাকতে অনুরোধ করলেন।
Currently Selected:
:
Highlight
Share
Copy
![None](/_next/image?url=https%3A%2F%2Fimageproxy.youversionapistaging.com%2F58%2Fhttps%3A%2F%2Fweb-assets.youversion.com%2Fapp-icons%2Fen.png&w=128&q=75)
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version
All rights reserved.
© 2001 Bible League International