মথি ২১
২১
যীশুর যিরূশালেমে গমন
1 পরে যখন তাঁহারা যিরূশালেমের নিকটবর্তী হইয়া জৈতুন পর্বতে, বৈৎফগী গ্রামে আসিলেন, তখন যীশু দুই জন শিষ্যকে পাঠাইয়া দিলেন, 2 তাঁহাদিগকে বলিলেন, তোমাদের সম্মুখে ঐ গ্রামে যাও, অমনি দেখিতে পাইবে, একটি গর্দভী বাঁধা আছে, আর তাঁহার সঙ্গে একটি বৎস, খুলিয়া আমার নিকটে আন। 3 আর যদি কেহ তোমাদিগকে কিছু বলে, তবে বলিবে, ইহাদিগেতে প্রভুর প্রয়োজন আছে; তাহাতে সে তখনই তাহাদিগকে পাঠাইয়া দিবে। 4 এইরূপ ঘটিল, যেন ভাববাদী দ্বারা কথিত এই বাক্য পূর্ণ হয়,
5 “তোমরা সিয়োন-কন্যাকে বল,
দেখ, তোমার রাজা তোমার কাছে আসিতেছেন;
তিনি মৃদুশীল, ও গর্দভের উপরে উপবিষ্ট;
এবং শাবকের, গর্দভ-বৎসের উপরে উপবিষ্ট।” #সখ ৯:৯
6 পরে ঐ শিষ্যেরা গিয়া যীশুর আজ্ঞানুসারে কার্য করিলেন, 7 গর্দভীকে ও শাবকটিকে আনিলেন, এবং তাহাদের উপরে আপনাদের বস্ত্র পাতিয়া দিলেন, আর তিনি তাহাদের উপরে বসিলেন। 8 আর ভিড়ের মধ্যে অধিকাংশ লোক আপন আপন বস্ত্র পথে পাতিয়া দিল, এবং অন্য অন্য লোক গাছের ডাল কাটিয়া পথে ছড়াইয়া দিল। 9 আর যে সকল লোক তাঁহার অগ্রপশ্চাৎ যাইতেছিল, তাহারা চেঁচাইয়া বলিতে লাগিল,
হোশান্না #২১:৯ হোশান্না শব্দটির অর্থ- ‘দয়া করিয়া আমাদের পরিত্রাণ কর’। দায়ূদ-সন্তান,
ধন্য, যিনি প্রভুর নামে আসিতেছেন;
ঊর্ধ্বলোকে হোশান্না।
10 আর তিনি যিরূশালেমে প্রবেশ করিলে নগরময় হুলস্থূল পড়িয়া গেল; সকলে কহিল, উনি কে? 11 তাহাতে লোকসমূহ কহিল, উনি সেই ভাববাদী, গালীলের নাসরতীয় যীশু।
12 পরে #মার্ক ১১:১২-১৮; লূক ১৯:৪৫-৪৮ যীশু ঈশ্বরের ধর্মধামে প্রবেশ করিলেন, এবং যত লোক ধর্মধামে ক্রয়-বিক্রয় করিতেছিল, সেই সকলকে বাহির করিয়া দিলেন, এবং পোদ্দারদের মেজ ও যাহারা কপোত বিক্রয় করিতেছিল, তাহাদের আসন সকল উল্টাইয়া ফেলিলেন, 13 আর তাহাদিগকে কহিলেন, লেখা আছে, “আমার গৃহ প্রার্থনা-গৃহ বলিয়া আখ্যাত হইবে,” কিন্তু তোমরা ইহা “দস্যুগণের গহ্বর” করিয়া তুলিতেছ। #যিশা ৫৬:৭; যির ৭:১১ 14 পরে অন্ধেরা ও খঞ্জেরা ধর্মধামে তাঁহার নিকট আসিল, আর তিনি তাহাদিগকে সুস্থ করিলেন। 15 কিন্তু প্রধান যাজকগণ ও অধ্যাপকেরা তাঁহার কৃত আশ্চর্য ক্রিয়া সকল দেখিয়া, আর যে বালকেরা ‘হোশান্না দায়ূদ-সন্তান,’ বলিয়া ধর্মধামে চেঁচাইতেছিল, তাহাদিগকে দেখিয়া, রুষ্ট হইল; 16 এবং তাঁহাকে কহিল, শুনিতেছ, ইহারা কি বলিতেছে? যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, হাঁ; তোমরা কি কখনও পাঠ কর নাই যে, “তুমি শিশু ও দুগ্ধপোষ্যদের মুখ হইতে স্তব সমপন্ন করিয়াছ”? #গীত ৮:২ 17 পরে তিনি তাহাদিগকে ছাড়িয়া নগরের বাহিরে বৈথনিয়ায় গেলেন, আর সেই স্থানে রাত্রি যাপন করিলেন।
18 প্রাতঃকালে নগরে ফিরিয়া যাইবার সময়ে তিনি ক্ষুধিত হইলেন। 19 পথের পার্শ্বে একটি ডুমুর গাছ দেখিয়া তিনি তাহার নিকটে গেলেন, এবং পত্র বিনা আর কিছুই দেখিতে পাইলেন না। তখন তিনি গাছটিকে কহিলেন, আর কখনও তোমাতে ফল না ধরুক; আর হঠাৎ সেই ডুমুর গাছটি শুকাইয়া গেল। 20 তাহা দেখিয়া শিষ্যেরা আশ্চর্য জ্ঞান করিয়া কহিলেন, ডুমুরগাছটি হঠাৎ শুকাইয়া গেল কিরূপে? 21 যীশু উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে, আর সন্দেহ না কর, তবে তোমরা কেবল ডুমুরগাছের প্রতি এইরূপ করিতে পারিবে, তাহা নয়, কিন্তু এই পর্বতকেও যদি বল, ‘উপড়িয়া যাও, আর সমুদ্রে গিয়া পড়,’ তাহাই হইবে। 22 আর তোমরা প্রার্থনায় বিশ্বাসপূর্বক যাহা কিছু যাচ্ঞা করিবে, সেই সকলই পাইবে।
যীশু যিরূশালেমে শিক্ষা দেন
যীশুর ক্ষমতা বিষয়ক শিক্ষা #মার্ক ১১:২৭-৩৩; ১২:১-১২; লূক ২০:১-১৯
23 পরে তিনি ধর্মধামে আসিলে পর তাঁহার উপদেশ দিবার সময়ে প্রধান যাজকেরা ও লোকদের প্রাচীনবর্গ নিকটে আসিয়া বলিল, তুমি কি ক্ষমতায় এই সকল করিতেছ? আর কেই বা তোমাকে এই ক্ষমতা দিয়াছে? 24 যীশু উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, আমিও তোমাদিগকে একটি কথা জিজ্ঞাসা করিব; তাহা যদি আমাকে বল, তবে কি ক্ষমতায় এই সকল করিতেছি, তাহা আমিও তোমাদিগকে বলিব। 25 যোহনের বাপ্তিস্ম কোথা হইতে হইয়াছিল? স্বর্গ হইতে না মনুষ্য হইতে? তখন তাহারা পরস্পর তর্ক করিয়া বলিল, যদি বলি স্বর্গ হইতে, তাহা হইলে এ আমাদিগকে বলিবে, তবে তোমরা তাঁহাকে বিশ্বাস কর নাই কেন? 26 আর যদি বলি, মনুষ্য হইতে, লোকসাধারণকে ভয় করি; কারণ সকলে যোহনকে ভাববাদী বলিয়া মানে। 27 তখন তাহারা যীশুকে উত্তর করিয়া বলিল, আমরা জানি না। তিনিও তাহাদিগকে কহিলেন, তবে আমিও কি ক্ষমতায় এই সকল করিতেছি, তোমাদিগকে বলিব না। 28 কিন্তু তোমাদের কেমন বোধ হয়? এক ব্যক্তির দুই পুত্র ছিল; তিনি প্রথম জনের নিকটে গিয়া কহিলেন, বৎস, যাও, আজ দ্রাক্ষাক্ষেত্রে কর্ম কর। 29 সে উত্তর করিল, আমার ইচ্ছা নাই; শেষে অনুশোচনা করিয়া গেল। 30 পরে তিনি দ্বিতীয় জনের নিকটে গিয়া সেইরূপ কহিলেন। সে উত্তর করিল, কর্তা, আমি যাইতেছি; কিন্তু গেল না। 31 সেই দুইয়ের মধ্যে কে পিতার ইচ্ছা পালন করিল? তাহারা কহিল, প্রথম জন। যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, করগ্রাহী ও বেশ্যারা তোমাদের অগ্রে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করিতেছে। 32 কেননা যোহন ধার্মিকতার পথ দিয়া তোমাদের নিকটে আসিলেন, আর তোমরা তাঁহাকে বিশ্বাস করিলে না; কিন্তু করগ্রাহী ও বেশ্যারা তাঁহাকে বিশ্বাস করিল; আর তোমরা তাহা দেখিয়া শেষেও এইরূপ অনুশোচনা করিলে না যে, তাঁহাকে বিশ্বাস করিবে।
গৃহকর্তা ও কৃষকদের দৃষ্টান্ত
33 আর একটি দৃষ্টান্ত শুন; একজন গৃহকর্তা ছিলেন, তিনি দ্রাক্ষার ক্ষেত্র প্রস্তুত করিয়া তাহার চারিদিকে বেড়া দিলেন, ও তাহার মধ্যে দ্রাক্ষা-কুণ্ড খনন করিলেন, এবং উচ্চগৃহ নির্মাণ করিলেন; পরে কৃষকদিগকে তাহা জমা দিয়া অন্য দেশে চলিয়া গেলেন। 34 আর ফলের সময় সন্নিকট হইলে তিনি আপন ফল গ্রহণ করিবার জন্য কৃষকদের নিকটে নিজ দাসদিগকে প্রেরণ করিলেন। 35 তখন কৃষকেরা তাঁহার দাসদিগকে ধরিয়া কাহাকেও প্রহার করিল, কাহাকেও বধ করিল, কাহাকেও পাথর মারিল। 36 আবার তিনি পূর্বাপেক্ষা আরও অনেক দাস প্রেরণ করিলেন; তাহাদের প্রতিও তাহারা সেই মত ব্যবহার করিল। 37 অবশেষে তিনি আপনার পুত্রকে তাহাদের নিকটে প্রেরণ করিলেন, বলিলেন, তাহারা আমার পুত্রকে সমাদর করিবে। 38 কিন্তু কৃষকেরা পুত্রকে দেখিয়া পরস্পর বলিল, এই ব্যক্তিই উত্তরাধিকারী, আইস, আমরা ইহাকে বধ করিয়া ইহার অধিকার হস্তগত করি। 39 পরে তাহারা তাঁহাকে ধরিয়া দ্রাক্ষাক্ষেত্রের বাহিরে ফেলিয়া বধ করিল। 40 অতএব দ্রাক্ষাক্ষেত্রের কর্তা যখন আসিবেন, তখন সেই কৃষকদিগকে কি করিবেন? 41 তাহারা তাঁহাকে বলিল, সেই দুষ্টদিগকে নিদারুণরূপে বিনষ্ট করিবেন, এবং সেই ক্ষেত্র এমন অন্য কৃষকদিগকে জমা দিবেন, যাহারা ফলের সময়ে তাঁহাকে ফল দিবে। 42 যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা কি কখনও শাস্ত্রে পাঠ কর নাই,
“যে প্রস্তর গাঁথকেরা অগ্রাহ্য করিয়াছে,
তাহাই কোণের প্রধান প্রস্তর হইয়া উঠিল;
ইহা প্রভু হইতেই হইয়াছে,
ইহা আমাদের দৃষ্টিতে অদ্ভুত”? #গীত ১১৮:২২,২৩
43 এই জন্য আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, তোমাদের নিকট হইতে ঈশ্বরের রাজ্য কাড়িয়া লওয়া যাইবে, এবং এমন এক জাতিকে দেওয়া হইবে, যে জাতি তাহার ফল দিবে। 44 আর এই প্রস্তরের উপরে যে পড়িবে, সে ভগ্ন হইবে; কিন্তু এই প্রস্তর যাহার উপরে পড়িবে, তাহাকে চূরমার করিয়া ফেলিবে।
45 তাঁহার এই সকল দৃষ্টান্ত শুনিয়া প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা বুঝিল যে, তিনি তাহাদেরই বিষয় বলিতেছেন। 46 আর তাহারা তাঁহাকে ধরিতে চেষ্টা করিল, কিন্তু লোকসাধারণকে ভয় করিল, কেননা লোকে তাঁহাকে ভাববাদী বলিয়া মানিত।
Currently Selected:
মথি ২১: বিবিএস-গসপেল
Highlight
Share
Copy
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Copyright © 2023 Bangladesh Bible Society. All rights reserved.
মথি ২১
২১
যীশুর যিরূশালেমে গমন
1 পরে যখন তাঁহারা যিরূশালেমের নিকটবর্তী হইয়া জৈতুন পর্বতে, বৈৎফগী গ্রামে আসিলেন, তখন যীশু দুই জন শিষ্যকে পাঠাইয়া দিলেন, 2 তাঁহাদিগকে বলিলেন, তোমাদের সম্মুখে ঐ গ্রামে যাও, অমনি দেখিতে পাইবে, একটি গর্দভী বাঁধা আছে, আর তাঁহার সঙ্গে একটি বৎস, খুলিয়া আমার নিকটে আন। 3 আর যদি কেহ তোমাদিগকে কিছু বলে, তবে বলিবে, ইহাদিগেতে প্রভুর প্রয়োজন আছে; তাহাতে সে তখনই তাহাদিগকে পাঠাইয়া দিবে। 4 এইরূপ ঘটিল, যেন ভাববাদী দ্বারা কথিত এই বাক্য পূর্ণ হয়,
5 “তোমরা সিয়োন-কন্যাকে বল,
দেখ, তোমার রাজা তোমার কাছে আসিতেছেন;
তিনি মৃদুশীল, ও গর্দভের উপরে উপবিষ্ট;
এবং শাবকের, গর্দভ-বৎসের উপরে উপবিষ্ট।” #সখ ৯:৯
6 পরে ঐ শিষ্যেরা গিয়া যীশুর আজ্ঞানুসারে কার্য করিলেন, 7 গর্দভীকে ও শাবকটিকে আনিলেন, এবং তাহাদের উপরে আপনাদের বস্ত্র পাতিয়া দিলেন, আর তিনি তাহাদের উপরে বসিলেন। 8 আর ভিড়ের মধ্যে অধিকাংশ লোক আপন আপন বস্ত্র পথে পাতিয়া দিল, এবং অন্য অন্য লোক গাছের ডাল কাটিয়া পথে ছড়াইয়া দিল। 9 আর যে সকল লোক তাঁহার অগ্রপশ্চাৎ যাইতেছিল, তাহারা চেঁচাইয়া বলিতে লাগিল,
হোশান্না #২১:৯ হোশান্না শব্দটির অর্থ- ‘দয়া করিয়া আমাদের পরিত্রাণ কর’। দায়ূদ-সন্তান,
ধন্য, যিনি প্রভুর নামে আসিতেছেন;
ঊর্ধ্বলোকে হোশান্না।
10 আর তিনি যিরূশালেমে প্রবেশ করিলে নগরময় হুলস্থূল পড়িয়া গেল; সকলে কহিল, উনি কে? 11 তাহাতে লোকসমূহ কহিল, উনি সেই ভাববাদী, গালীলের নাসরতীয় যীশু।
12 পরে #মার্ক ১১:১২-১৮; লূক ১৯:৪৫-৪৮ যীশু ঈশ্বরের ধর্মধামে প্রবেশ করিলেন, এবং যত লোক ধর্মধামে ক্রয়-বিক্রয় করিতেছিল, সেই সকলকে বাহির করিয়া দিলেন, এবং পোদ্দারদের মেজ ও যাহারা কপোত বিক্রয় করিতেছিল, তাহাদের আসন সকল উল্টাইয়া ফেলিলেন, 13 আর তাহাদিগকে কহিলেন, লেখা আছে, “আমার গৃহ প্রার্থনা-গৃহ বলিয়া আখ্যাত হইবে,” কিন্তু তোমরা ইহা “দস্যুগণের গহ্বর” করিয়া তুলিতেছ। #যিশা ৫৬:৭; যির ৭:১১ 14 পরে অন্ধেরা ও খঞ্জেরা ধর্মধামে তাঁহার নিকট আসিল, আর তিনি তাহাদিগকে সুস্থ করিলেন। 15 কিন্তু প্রধান যাজকগণ ও অধ্যাপকেরা তাঁহার কৃত আশ্চর্য ক্রিয়া সকল দেখিয়া, আর যে বালকেরা ‘হোশান্না দায়ূদ-সন্তান,’ বলিয়া ধর্মধামে চেঁচাইতেছিল, তাহাদিগকে দেখিয়া, রুষ্ট হইল; 16 এবং তাঁহাকে কহিল, শুনিতেছ, ইহারা কি বলিতেছে? যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, হাঁ; তোমরা কি কখনও পাঠ কর নাই যে, “তুমি শিশু ও দুগ্ধপোষ্যদের মুখ হইতে স্তব সমপন্ন করিয়াছ”? #গীত ৮:২ 17 পরে তিনি তাহাদিগকে ছাড়িয়া নগরের বাহিরে বৈথনিয়ায় গেলেন, আর সেই স্থানে রাত্রি যাপন করিলেন।
18 প্রাতঃকালে নগরে ফিরিয়া যাইবার সময়ে তিনি ক্ষুধিত হইলেন। 19 পথের পার্শ্বে একটি ডুমুর গাছ দেখিয়া তিনি তাহার নিকটে গেলেন, এবং পত্র বিনা আর কিছুই দেখিতে পাইলেন না। তখন তিনি গাছটিকে কহিলেন, আর কখনও তোমাতে ফল না ধরুক; আর হঠাৎ সেই ডুমুর গাছটি শুকাইয়া গেল। 20 তাহা দেখিয়া শিষ্যেরা আশ্চর্য জ্ঞান করিয়া কহিলেন, ডুমুরগাছটি হঠাৎ শুকাইয়া গেল কিরূপে? 21 যীশু উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে, আর সন্দেহ না কর, তবে তোমরা কেবল ডুমুরগাছের প্রতি এইরূপ করিতে পারিবে, তাহা নয়, কিন্তু এই পর্বতকেও যদি বল, ‘উপড়িয়া যাও, আর সমুদ্রে গিয়া পড়,’ তাহাই হইবে। 22 আর তোমরা প্রার্থনায় বিশ্বাসপূর্বক যাহা কিছু যাচ্ঞা করিবে, সেই সকলই পাইবে।
যীশু যিরূশালেমে শিক্ষা দেন
যীশুর ক্ষমতা বিষয়ক শিক্ষা #মার্ক ১১:২৭-৩৩; ১২:১-১২; লূক ২০:১-১৯
23 পরে তিনি ধর্মধামে আসিলে পর তাঁহার উপদেশ দিবার সময়ে প্রধান যাজকেরা ও লোকদের প্রাচীনবর্গ নিকটে আসিয়া বলিল, তুমি কি ক্ষমতায় এই সকল করিতেছ? আর কেই বা তোমাকে এই ক্ষমতা দিয়াছে? 24 যীশু উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, আমিও তোমাদিগকে একটি কথা জিজ্ঞাসা করিব; তাহা যদি আমাকে বল, তবে কি ক্ষমতায় এই সকল করিতেছি, তাহা আমিও তোমাদিগকে বলিব। 25 যোহনের বাপ্তিস্ম কোথা হইতে হইয়াছিল? স্বর্গ হইতে না মনুষ্য হইতে? তখন তাহারা পরস্পর তর্ক করিয়া বলিল, যদি বলি স্বর্গ হইতে, তাহা হইলে এ আমাদিগকে বলিবে, তবে তোমরা তাঁহাকে বিশ্বাস কর নাই কেন? 26 আর যদি বলি, মনুষ্য হইতে, লোকসাধারণকে ভয় করি; কারণ সকলে যোহনকে ভাববাদী বলিয়া মানে। 27 তখন তাহারা যীশুকে উত্তর করিয়া বলিল, আমরা জানি না। তিনিও তাহাদিগকে কহিলেন, তবে আমিও কি ক্ষমতায় এই সকল করিতেছি, তোমাদিগকে বলিব না। 28 কিন্তু তোমাদের কেমন বোধ হয়? এক ব্যক্তির দুই পুত্র ছিল; তিনি প্রথম জনের নিকটে গিয়া কহিলেন, বৎস, যাও, আজ দ্রাক্ষাক্ষেত্রে কর্ম কর। 29 সে উত্তর করিল, আমার ইচ্ছা নাই; শেষে অনুশোচনা করিয়া গেল। 30 পরে তিনি দ্বিতীয় জনের নিকটে গিয়া সেইরূপ কহিলেন। সে উত্তর করিল, কর্তা, আমি যাইতেছি; কিন্তু গেল না। 31 সেই দুইয়ের মধ্যে কে পিতার ইচ্ছা পালন করিল? তাহারা কহিল, প্রথম জন। যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, করগ্রাহী ও বেশ্যারা তোমাদের অগ্রে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করিতেছে। 32 কেননা যোহন ধার্মিকতার পথ দিয়া তোমাদের নিকটে আসিলেন, আর তোমরা তাঁহাকে বিশ্বাস করিলে না; কিন্তু করগ্রাহী ও বেশ্যারা তাঁহাকে বিশ্বাস করিল; আর তোমরা তাহা দেখিয়া শেষেও এইরূপ অনুশোচনা করিলে না যে, তাঁহাকে বিশ্বাস করিবে।
গৃহকর্তা ও কৃষকদের দৃষ্টান্ত
33 আর একটি দৃষ্টান্ত শুন; একজন গৃহকর্তা ছিলেন, তিনি দ্রাক্ষার ক্ষেত্র প্রস্তুত করিয়া তাহার চারিদিকে বেড়া দিলেন, ও তাহার মধ্যে দ্রাক্ষা-কুণ্ড খনন করিলেন, এবং উচ্চগৃহ নির্মাণ করিলেন; পরে কৃষকদিগকে তাহা জমা দিয়া অন্য দেশে চলিয়া গেলেন। 34 আর ফলের সময় সন্নিকট হইলে তিনি আপন ফল গ্রহণ করিবার জন্য কৃষকদের নিকটে নিজ দাসদিগকে প্রেরণ করিলেন। 35 তখন কৃষকেরা তাঁহার দাসদিগকে ধরিয়া কাহাকেও প্রহার করিল, কাহাকেও বধ করিল, কাহাকেও পাথর মারিল। 36 আবার তিনি পূর্বাপেক্ষা আরও অনেক দাস প্রেরণ করিলেন; তাহাদের প্রতিও তাহারা সেই মত ব্যবহার করিল। 37 অবশেষে তিনি আপনার পুত্রকে তাহাদের নিকটে প্রেরণ করিলেন, বলিলেন, তাহারা আমার পুত্রকে সমাদর করিবে। 38 কিন্তু কৃষকেরা পুত্রকে দেখিয়া পরস্পর বলিল, এই ব্যক্তিই উত্তরাধিকারী, আইস, আমরা ইহাকে বধ করিয়া ইহার অধিকার হস্তগত করি। 39 পরে তাহারা তাঁহাকে ধরিয়া দ্রাক্ষাক্ষেত্রের বাহিরে ফেলিয়া বধ করিল। 40 অতএব দ্রাক্ষাক্ষেত্রের কর্তা যখন আসিবেন, তখন সেই কৃষকদিগকে কি করিবেন? 41 তাহারা তাঁহাকে বলিল, সেই দুষ্টদিগকে নিদারুণরূপে বিনষ্ট করিবেন, এবং সেই ক্ষেত্র এমন অন্য কৃষকদিগকে জমা দিবেন, যাহারা ফলের সময়ে তাঁহাকে ফল দিবে। 42 যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা কি কখনও শাস্ত্রে পাঠ কর নাই,
“যে প্রস্তর গাঁথকেরা অগ্রাহ্য করিয়াছে,
তাহাই কোণের প্রধান প্রস্তর হইয়া উঠিল;
ইহা প্রভু হইতেই হইয়াছে,
ইহা আমাদের দৃষ্টিতে অদ্ভুত”? #গীত ১১৮:২২,২৩
43 এই জন্য আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, তোমাদের নিকট হইতে ঈশ্বরের রাজ্য কাড়িয়া লওয়া যাইবে, এবং এমন এক জাতিকে দেওয়া হইবে, যে জাতি তাহার ফল দিবে। 44 আর এই প্রস্তরের উপরে যে পড়িবে, সে ভগ্ন হইবে; কিন্তু এই প্রস্তর যাহার উপরে পড়িবে, তাহাকে চূরমার করিয়া ফেলিবে।
45 তাঁহার এই সকল দৃষ্টান্ত শুনিয়া প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা বুঝিল যে, তিনি তাহাদেরই বিষয় বলিতেছেন। 46 আর তাহারা তাঁহাকে ধরিতে চেষ্টা করিল, কিন্তু লোকসাধারণকে ভয় করিল, কেননা লোকে তাঁহাকে ভাববাদী বলিয়া মানিত।
Currently Selected:
:
Highlight
Share
Copy
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Copyright © 2023 Bangladesh Bible Society. All rights reserved.