YouVersion Logo
Search Icon

মার্ক ৪

যীশুর কয়েকটি দৃষ্টান্ত
1 পরে #মথি ১৩:১-২৩; লূক ৮:৪-১৫ তিনি আবার সমুদ্রের তীরে উপদেশ দিতে লাগিলেন; তাহাতে তাঁহার নিকটে এত অধিক লোক একত্র হইল যে, তিনি একখানি নৌকায় উঠিয়া সমুদ্রে বসিলেন, এবং সমাগত লোক সকল সমুদ্রের তীরে স্থলে থাকিল। 2 তখন তিনি দৃষ্টান্ত দ্বারা তাহাদিগকে অনেক উপদেশ দিতে লাগিলেন। উপদেশের মধ্যে তিনি তাহাদিগকে বলিলেন, 3 শুন; দেখ, বীজবাপক বীজ বপন করিতে গেল; 4 বপনের সময়ে কতক বীজ পথের পার্শ্বে পড়িল, তাহাতে পক্ষীরা আসিয়া তাহা খাইয়া ফেলিল। 5 আর কতক বীজ পাষাণময় স্থানে পড়িল, যেখানে অধিক মাটি পাইল না; তাহাতে অধিক মাটি না পাওয়াতে তাহা শীঘ্র অঙ্কুরিত হইয়া উঠিল, 6 কিন্তু সূর্য উঠিলে পর পুড়িয়া গেল, এবং তাহার মূল না থাকাতে শুকাইয়া গেল। 7 আর কতক বীজ কাঁটাবনের মধ্যে পড়িল, তাহাতে কাঁটাবন বাড়িয়া তাহা চাপিয়া রাখিল, তাহার ফল ধরিল না। 8 আর কতক বীজ উত্তম ভূমিতে পড়িল, তাহা অঙ্কুরিত হইয়া ও বাড়িয়া উঠিয়া ফল দিল; কতক ত্রিশ গুণ, কতক ষাট গুণ, ও কতক শত গুণ ফল দিল। 9 পরে তিনি কহিলেন, যাহার শুনিবার কান থাকে, সে শুনুক।
10 যখন তিনি নির্জনে ছিলেন, তাঁহার সঙ্গীরা সেই দ্বাদশ জনের সহিত তাঁহাকে দৃষ্টান্ত কয়টির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিলেন। 11 তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, ঈশ্বরের রাজ্যের নিগূঢ় তত্ত্ব তোমাদিগকে দত্ত হইয়াছে; কিন্তু ঐ বাহিরের লোকদের নিকটে সকলই দৃষ্টান্ত দ্বারা বলা হইয়া থাকে; 12 যেন,
তাহারা দেখিয়া দেখে, কিন্তু টের না পায়,
এবং শুনিয়া শুনে, কিন্তু না বুঝে,
পাছে তাহারা ফিরিয়া আইসে,
ও তাহাদিগকে ক্ষমা করা যায়।
13 পরে তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, এই দৃষ্টান্ত কি বুঝিতে পার না? তবে কেমন করিয়া সকল দৃষ্টান্ত বুঝিতে পারিবে? 14 সেই বীজবাপক বাক্য-বীজ বুনে। 15 পথের পার্শ্বে যাহারা, তাহারা এমন লোক, যাহাদের মধ্যে বাক্য-বীজ বুনা যায়; আর যখন তাহারা শুনে, তৎক্ষণাৎ শয়তান আসিয়া, তাহাদের মধ্যে যাহা বপন করা হইয়াছিল, সেই বাক্য হরণ করিয়া লইয়া যায়। 16 আর সেইরূপ যাহারা পাষাণময় ভূমিতে উপ্ত, তাহারা এমন লোক, যাহারা বাক্যটি শুনিয়া তৎক্ষণাৎ আহ্লাদপূর্বক গ্রহণ করে; 17 আর তাহাদের অন্তরে মূল নাই, কিন্তু তাহারা অল্পকাল মাত্র স্থির থাকে, পরে সেই বাক্য হেতু ক্লেশ কিম্বা তাড়না ঘটিলে তৎক্ষণাৎ বিঘ্ন পায়। 18 আর অন্য যাহারা কাঁটাবনের মধ্যে উপ্ত, তাহারা এমন লোক, 19 যাহারা বাক্যটি শুনিয়াছে, কিন্তু সংসারের চিন্তা, ধনের মায়া ও অন্যান্য বিষয়ের অভিলাষ ভিতরে গিয়া ঐ বাক্য চাপিয়া রাখে, 20 তাহাতে তাহা ফলহীন হয়। আর যাহারা উত্তম ভূমিতে উপ্ত, তাহারা এমন লোক, যাহারা সেই বাক্য শুনিয়া গ্রাহ্য করে, এবং কেহ ত্রিশ গুণ, কেহ ষাট গুণ, ও কেহ শত গুণ, ফল দেয়।
21 তিনি তাহাদিগকে আরও কহিলেন, ঢাকনার নিচে কিম্বা খাটের নিচে রাখিবার জন্য কেহ কি প্রদীপ আনে? না দীপাধারের উপরে রাখিবার জন্য? 22 কেননা এমন গুপ্ত কিছুই নাই, যাহা প্রকাশিত হইবে না; এমন লুক্কায়িত কিছুই নাই, যাহা প্রকাশ পাইবে না। 23 যাহার শুনিবার কান থাকে, সে শুনুক। 24 আর তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা দেখিও, কি শুন; তোমরা যে পরিমাণে পরিমাণ কর, সেই পরিমাণে তোমাদের নিমিত্ত পরিমাণ করা যাইবে; এবং তোমাদিগকে আরও দেওয়া যাইবে। 25 কারণ যাহার আছে, তাহাকে আরও দেওয়া যাইবে; আর যাহার নাই, তাহার যাহা আছে, তাহাও তাহার নিকট হইতে লওয়া যাইবে।
26 তিনি আরও কহিলেন, ঈশ্বরের রাজ্য এইরূপ। 27 কোন ব্যক্তি যেন ভূমিতে বীজ বুনে; পরে রাত দিন নিদ্রা যায় ও উঠে, ইতিমধ্যে ঐ বীজ অঙ্কুরিত হইয়া বাড়িয়া উঠে, কিন্তু কিরূপে তাহা বাড়িয়া উঠে তাহা সে জানে না। 28 ভূমি আপনা আপনি ফল উৎপন্ন করে; প্রথমে অঙ্কুর, পরে শীষ, তাহার পর শীষের মধ্যে পূর্ণ শস্য। 29 কিন্তু ফল পাকিলে সে তৎক্ষণাৎ কাস্তে লাগায়, কেননা শস্য কাটিবার সময় উপস্থিত।
30 আর তিনি কহিলেন, আমরা কিসের সহিত ঈশ্বরের রাজ্যের তুলনা করিব? কোন্‌ দৃষ্টান্ত দ্বারাই বা তাহা ব্যক্ত করিব? 31 তাহা একটি সরিষা-দানার তুল্য; সেই বীজ ভূমিতে বুনিবার সময়ে ভূমির সকল বীজের মধ্যে অতি ক্ষুদ্র বটে, 32 কিন্তু বুনা হইলে তাহা অঙ্কুরিত হইয়া সকল শাক হইতে বড় হইয়া উঠে, এবং বড় বড় ডাল ফেলে; তাহাতে আকাশের পক্ষিগণ তাহার ছায়ার নিচে বাস করিতে পারে।
33 এই প্রকার অনেকগুলি দৃষ্টান্ত দ্বারা তিনি তাহাদের শুনিবার ক্ষমতা অনুসারে তাহাদের কাছে বাক্য প্রচার করিতেন; 34 আর দৃষ্টান্ত ব্যতিরেকে তাহাদিগকে কিছুই বলিতেন না; পরে বিরলে আপন শিষ্যদিগকে সমস্ত বুঝাইয়া দিতেন।
যীশুর কতকগুলি অলৌকিক কার্য
যীশু ঝড় থামান, ও একজন ভূতগ্রস্তকে সুস্থ করেন
35 সেই দিন #মথি ৮:২৩-২৪; লূক ৮:২২-৩৯ সন্ধ্যা হইলে তিনি তাঁহাদিগকে বলিলেন, চল, আমরা ওপারে যাই। 36 তখন তাঁহারা লোকদিগকে বিদায় করিয়া, তিনি নৌকাখানিতে যেমন ছিলেন, তেমনি তাঁহাকে সঙ্গে লইয়া গেলেন; এবং আরও নৌকা তাঁহার সঙ্গে ছিল। 37 পরে ভারী ঝড় উঠিল, এবং তরঙ্গমালা নৌকায় এমনি আঘাত করিল যে, নৌকা জলে পূর্ণ হইতে লাগিল। 38 তখন তিনি নৌকার পশ্চাদ্‌ভাগে বালিশে মাথা দিয়া নিদ্রিত ছিলেন; আর তাঁহারা তাঁহাকে জাগাইয়া কহিলেন, হে গুরু, আপনার কি চিন্তা হইতেছে না যে, আমরা মারা পড়িলাম? 39 তখন তিনি জাগিয়া উঠিয়া বাতাসকে ধমক্‌ দিলেন, ও সমুদ্রকে বলিলেন, নীরব হও, স্থির হও; তাহাতে বাতাস থামিল, এবং মহাশান্তি হইল। 40 পরে তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা এইরূপ ভীরু হও কেন? এ কেমন, তোমাদের বিশ্বাস নাই? 41 তাহাতে তাঁহারা অতিশয় ভীত হইয়া পরস্পর কহিতে লাগিলেন, ইনি তবে কে যে, বায়ু এবং সমুদ্রও ইহাঁর আজ্ঞা মানে?

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in