ইউহোন্না 8
8
জেনায় ধরা পরা স্ত্রীলোকের বিচার
1পরে তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেল, কিন্তু ঈসা জৈতুন পর্বতে গেলেন। 2আর খুব ভোরে তিনি পুনর্বার বায়তুল-মোকাদ্দসে আসলে পর সমস্ত লোক তাঁর কাছে আসল; আর তিনি বসে তাঁদেরকে উপদেশ দিতে লাগলেন। 3তখন আলেম ও ফরীশীরা একটি স্ত্রীলোককে তাঁর কাছে আনলো যে জেনা করতে গিয়ে ধরা পরেছিল। তাকে মধ্যস্থানে দাঁড় করিয়ে তাঁকে বললো, 4হুজুর, এই স্ত্রীলোকটা জেনা করা অবস্থায় ধরা পড়েছে। 5শরীয়তে মূসা এই রকম লোককে পাথর মারবার হুকুম আমাদেরকে দিয়েছেন, তবে আপনি কি বলেন? 6তারা তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য এই কথা বললো, যেন তাঁর নামে দোষারোপ করার সূত্র পেতে পারে। কিন্তু ঈসা হেঁট হয়ে আঙ্গুল দিয়ে ভূমিতে লিখতে লাগলেন। 7পরে তারা যখন পুনঃ পুনঃ তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে লাগল তিনি মাথা তুলে তাদেরকে বললেন, তোমাদের মধ্যে যে কোন গুনাহ্ করে নি, সে-ই প্রথমে একে পাথর মারুক। 8পরে তিনি পুনর্বার হেঁট হয়ে আঙ্গুল দিয়ে ভূমিতে লিখতে লাগলেন। 9তখন তারা এই কথা শুনে এবং নিজ নিজ বিবেক দ্বারা দোষীকৃত হয়ে, একে একে বাইরে গেল, প্রাচীন লোক থেকে আরম্ভ করে শেষ জন পর্যন্ত চলে গেল; তাতে কেবল ঈসা অবশিষ্ট থাকলেন, আর সেই স্ত্রীলোকটি মধ্যস্থানে দাঁড়িয়েছিল। 10তখন ঈসা মাথা তুলে, স্ত্রীলোকটি ছাড়া আর কাউকেও দেখতে না পেয়ে, তাকে বললেন, হে নারী, যারা তোমার নামে অভিযোগ করেছিল, তারা কোথায়? কেউ কি তোমাকে দোষী করে নি? 11সে বললো, না, হুজুর, কেউ করে নি। তখন ঈসা তাকে বললেন, আমিও তোমাকে দোষী করি না; যাও, এখন থেকে আর গুনাহ্ করো না।
ঈসা মসীহ্ দুনিয়ার নূর
12আবার ঈসা লোকদের কাছে কথা বললেন, তিনি বললেন, আমি দুনিয়ার নূর; যে আমাকে অনুসরণ করে, সে কোন মতে অন্ধকারে চলবে না, কিন্তু জীবনের নূর পাবে। 13তাতে ফরীশীরা তাঁকে বললো, তুমি তোমার নিজের বিষয়ে নিজে সাক্ষ্য দিচ্ছ; তোমার সাক্ষ্য সত্যি নয়। 14জবাবে ঈসা তাদেরকে বললেন, যদিও আমি আমার বিষয়ে নিজে সাক্ষ্য দিই, তবুও আমার সাক্ষ্য সত্যি; কারণ আমি কোথা থেকে এসেছি, কোথায়ই বা যাচ্ছি, তা জানি; কিন্তু আমি কোথা থেকে এসেছি, আর কোথায়ই বা যাচ্ছি, তা তোমরা জান না। 15মানুষ যেভাবে বিচার করে তোমরাও সেইভাবে বিচার করছো; আমি কারো বিচার করি না। 16আর যদিও আমি বিচার করি, আমার বিচার সত্যি, কেননা আমি একা নই, কিন্তু আমি আছি এবং পিতা আছেন, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। 17আর তোমাদের শরীয়তেও লেখা আছে, দু’জনের সাক্ষ্য সত্যি। 18আমি নিজে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিই, আর পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন। 19তখন তারা তাঁকে বললো, তোমার পিতা কোথায়? জবাবে ঈসা বললেন, তোমরা আমাকেও জান না, আমার পিতাকেও জান না; যদি আমাকে জানতে, আমার পিতাকেও জানতে। 20এসব কথা তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসে উপদেশ দেবার সময়ে ভাণ্ডার-গৃহে বললেন; এবং কেউ তাঁকে ধরলো না, কারণ তখনও তাঁর সময় উপস্থিত হয় নি।
নিজের মৃত্যুর বিষয়ে ঈসা মসীহের ভবিষ্যদ্বাণী
21পরে তিনি আবার তাদেরকে বললেন, আমি যাচ্ছি, আর তোমরা আমার খোঁজ করবে ও তোমাদের গুনাহে মারা যাবে; আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা আসতে পার না। 22তখন ইহুদীরা বললো, এ কি আত্মঘাতী হবে? সেজন্য কি বলছে, আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা আসতে পার না? 23তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা অধঃস্থানের, আমি ঊর্ধ্বস্থানের; তোমরা এই দুনিয়ার, আমি এই দুনিয়ার নই। 24কেননা যদি বিশ্বাস না কর যে, আমিই তিনি, তবে তোমাদের গুনাহের মধ্যেই তোমরা মরবে। 25তখন তারা বললো, তুমি কে? ঈসা তাদেরকে বললেন, তা-ই তো প্রথম থেকে তোমাদেরকে বলছি। 26তোমাদের বিষয়ে বলবার ও বিচার করার অনেক কথা আছে; যা হোক, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি সত্য এবং আমি তাঁর কাছে যা যা শুনেছি, তা-ই দুনিয়াকে বলছি। 27তিনি যে তাদেরকে পিতার বিষয়ে বলছিলেন, তা তারা বুঝতে পারল না। 28তখন ঈসা বললেন, যখন তোমরা ইবনুল-ইনসানকে উঁচুতে তুলবে, তখন জানবে যে, আমিই তিনি, আর আমি নিজের থেকে কিছু করি না, কিন্তু পিতা যেমন আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন, সেই অনুসারে এসব কথা বলি। 29আর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আমার সঙ্গে সঙ্গে আছেন; তিনি আমাকে একা ছেড়ে দেন নি, কেননা আমি সব সময় তাঁর সন্তোষজনক কাজ করি।
30তিনি এসব কথা বললে পর অনেকে তাঁর উপর ঈমান আনলো।
সত্যিকারের সাহাবী
31অতএব যে ইহুদীরা তাঁর উপর ঈমান আনলো, তাদেরকে ঈসা বললেন, তোমরা যদি আমার কথায় স্থির থাক, তা হলে সত্যিই তোমরা আমার সাহাবী; 32আর তোমরা সেই সত্য জানবে এবং সেই সত্য তোমাদেরকে স্বাধীন করবে। 33তারা তাঁকে জবাবে বললো, আমরা ইব্রাহিমের বংশ, কখনও কারো গোলাম হই নি; আপনি কেমন করে বলছেন যে, তোমাদেরকে স্বাধীন করা যাবে?
34ঈসা জবাবে তাদেরকে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, যে কেউ গুনাহ্ করে, সে গুনাহ্র গোলাম। 35আর গোলাম বাড়িতে চিরকাল থাকে না, পুত্র চিরকাল থাকেন। 36অতএব পুত্র যদি তোমাদেরকে স্বাধীন করেন, তবে তোমরা প্রকৃতভাবে স্বাধীন হবে। 37আমি জানি, তোমরা ইব্রাহিমের বংশ; কিন্তু আমাকে হত্যা করতে চেষ্টা করছো, কারণ আমার কালাম তোমাদের অন্তরে স্থান পায় না। 38আমার পিতার কাছে আমি যা যা দেখেছি, তা-ই বলছি; আর তোমাদের পিতার কাছে তোমরা যা যা শুনেছ, তা-ই করছো।
ঈসা মসীহ্ ও হযরত ইব্রাহিম
39তারা জবাবে তাকে বললো, আমাদের পিতা ইব্রাহিম। ঈসা তাদেরকে বললেন, তোমরা যদি ইব্রাহিমের সন্তান হতে, তবে ইব্রাহিমের মতই কাজ করতে। 40কিন্তু আল্লাহ্র কাছে সত্য শুনে তোমাদেরকে জানিয়েছি যে আমি, আমাকেই হত্যা করতে চেষ্টা করছো; ইব্রাহিম এরকম করেন নি। 41তোমাদের পিতার কাজ তোমরা করছো। তারা তাঁকে বললো, আমরা জারজ সন্তান নই; আমাদের একমাত্র পিতা আছেন, তিনি আল্লাহ্। 42ঈসা তাদেরকে বললেন, আল্লাহ্ যদি তোমাদের পিতা হতেন, তবে তোমরা আমাকে মহব্বত করতে, কেননা আমি আল্লাহ্ থেকে বের হয়ে এসেছি; আমি তো নিজের থেকে আসি নি, কিন্তু তিনিই আমাকে প্রেরণ করেছেন। 43তোমরা কেন আমার কথা বোঝ না? কারণ এই যে, তোমরা আমার কালাম গ্রহণ করতে পার না। 44তোমরা তোমাদের পিতা শয়তানের এবং তোমাদের পিতার অভিলাষগুলো পালন করাই তোমাদের ইচ্ছা; সে আদি থেকেই নরহন্তা, কখনও সত্যে বাস করে নি, কারণ তার মধ্যে সত্য নেই। সে যখন মিথ্যা বলে, তখন নিজ থেকেই বলে, কেননা সে মিথ্যাবাদী ও মিথ্যার পিতা। 45কিন্তু আমি সত্য বলি, তাই তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর না। 46তোমাদের মধ্যে কে আমাকে গুনাহ্গার বলে প্রমাণ করতে পারে? যদি আমি সত্যি বলি, তবে তোমরা কেন আমার উপর ঈমান আন না? 47যে কেউ আল্লাহ্র, সে আল্লাহ্র কথাগুলো শুনে; এজন্যই তোমরা শোন না, কারণ তোমরা আল্লাহ্র নও।
48ইহুদীরা জবাবে তাঁকে বললো, আমরা কি ঠিকই বলি না যে, তুমি এক জন সামেরীয় ও তোমাকে বদ-রূহে পেয়েছে? 49জবাবে ঈসা বললেন, আমাকে বদ-রূহে পায় নি, কিন্তু আমি আমার পিতাকে সমাদর করি, আর তোমরা আমাকে অসম্মান কর। 50কিন্তু আমি আমার গৌরবের খোঁজ করি না; এক জন আছেন, যিনি খোঁজ করেন ও বিচার করেন। 51সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, কেউ যদি আমার কথা পালন করে, সে কখনও মৃত্যু দেখবে না। 52ইহুদীরা তাঁকে বললো, এখন জানলাম, তোমাকে বদ-রূহে পেয়েছে; ইব্রাহিম ও নবীরা ইন্তেকাল করেছেন; আর তুমি বলছো, কেউ যদি আমার কথা পালন করে, সে কখনও মৃত্যুর আস্বাদ পাবে না। 53তুমি কি আমাদের পূর্বপুরুষ ইব্রাহিমের চেয়ে বড়? তিনি তো ইন্তেকাল করেছেন এবং নবীরাও ইন্তেকাল করেছেন; তুমি নিজের বিষয়ে কি বল? 54জবাবে ঈসা বললেন, আমি যদি নিজেকে গৌরবান্বিত করি, তবে আমার গৌরব কিছুই নয়; আমার পিতাই আমাকে গৌরবান্বিত করছেন, যাঁর বিষয়ে তোমরা বলে থাক যে, তিনি তোমাদের আল্লাহ্; 55আর তোমরা তাঁকে জান নি; কিন্তু আমি তাঁকে জানি; আর আমি যদি বলি যে, তাঁকে জানি না, তবে তোমাদেরই মত মিথ্যাবাদী হব; কিন্তু আমি তাঁকে জানি এবং তাঁর কালাম পালন করি। 56তোমাদের পূর্বপুরুষ ইব্রাহিম আমার দিন দেখবার আশায় উল্লসিত হয়েছিলেন এবং তিনি তা দেখলেন ও আনন্দ করলেন। 57তখন ইহুদীরা তাঁকে বললো, তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বছর হয় নি, তুমি কি ইব্রাহিমকে দেখেছ? 58ঈসা তাঁদেরকে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, ইব্রাহিমের জন্মের আগে থেকেই আমি আছি। 59তখন তারা তাঁর উপর ছুড়ে মারবার জন্য পাথর তুলে নিল, কিন্তু ঈসা নিজেকে গোপন করে বায়তুল-মোকাদ্দস থেকে বের হয়ে গেলেন।
Currently Selected:
ইউহোন্না 8: BACIB
Highlight
Share
Copy
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Kitabul Muqaddas (BACIB) Copyright © Biblical Aids to Churches in Bangladesh, 2013
ইউহোন্না 8
8
জেনায় ধরা পরা স্ত্রীলোকের বিচার
1পরে তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেল, কিন্তু ঈসা জৈতুন পর্বতে গেলেন। 2আর খুব ভোরে তিনি পুনর্বার বায়তুল-মোকাদ্দসে আসলে পর সমস্ত লোক তাঁর কাছে আসল; আর তিনি বসে তাঁদেরকে উপদেশ দিতে লাগলেন। 3তখন আলেম ও ফরীশীরা একটি স্ত্রীলোককে তাঁর কাছে আনলো যে জেনা করতে গিয়ে ধরা পরেছিল। তাকে মধ্যস্থানে দাঁড় করিয়ে তাঁকে বললো, 4হুজুর, এই স্ত্রীলোকটা জেনা করা অবস্থায় ধরা পড়েছে। 5শরীয়তে মূসা এই রকম লোককে পাথর মারবার হুকুম আমাদেরকে দিয়েছেন, তবে আপনি কি বলেন? 6তারা তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য এই কথা বললো, যেন তাঁর নামে দোষারোপ করার সূত্র পেতে পারে। কিন্তু ঈসা হেঁট হয়ে আঙ্গুল দিয়ে ভূমিতে লিখতে লাগলেন। 7পরে তারা যখন পুনঃ পুনঃ তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে লাগল তিনি মাথা তুলে তাদেরকে বললেন, তোমাদের মধ্যে যে কোন গুনাহ্ করে নি, সে-ই প্রথমে একে পাথর মারুক। 8পরে তিনি পুনর্বার হেঁট হয়ে আঙ্গুল দিয়ে ভূমিতে লিখতে লাগলেন। 9তখন তারা এই কথা শুনে এবং নিজ নিজ বিবেক দ্বারা দোষীকৃত হয়ে, একে একে বাইরে গেল, প্রাচীন লোক থেকে আরম্ভ করে শেষ জন পর্যন্ত চলে গেল; তাতে কেবল ঈসা অবশিষ্ট থাকলেন, আর সেই স্ত্রীলোকটি মধ্যস্থানে দাঁড়িয়েছিল। 10তখন ঈসা মাথা তুলে, স্ত্রীলোকটি ছাড়া আর কাউকেও দেখতে না পেয়ে, তাকে বললেন, হে নারী, যারা তোমার নামে অভিযোগ করেছিল, তারা কোথায়? কেউ কি তোমাকে দোষী করে নি? 11সে বললো, না, হুজুর, কেউ করে নি। তখন ঈসা তাকে বললেন, আমিও তোমাকে দোষী করি না; যাও, এখন থেকে আর গুনাহ্ করো না।
ঈসা মসীহ্ দুনিয়ার নূর
12আবার ঈসা লোকদের কাছে কথা বললেন, তিনি বললেন, আমি দুনিয়ার নূর; যে আমাকে অনুসরণ করে, সে কোন মতে অন্ধকারে চলবে না, কিন্তু জীবনের নূর পাবে। 13তাতে ফরীশীরা তাঁকে বললো, তুমি তোমার নিজের বিষয়ে নিজে সাক্ষ্য দিচ্ছ; তোমার সাক্ষ্য সত্যি নয়। 14জবাবে ঈসা তাদেরকে বললেন, যদিও আমি আমার বিষয়ে নিজে সাক্ষ্য দিই, তবুও আমার সাক্ষ্য সত্যি; কারণ আমি কোথা থেকে এসেছি, কোথায়ই বা যাচ্ছি, তা জানি; কিন্তু আমি কোথা থেকে এসেছি, আর কোথায়ই বা যাচ্ছি, তা তোমরা জান না। 15মানুষ যেভাবে বিচার করে তোমরাও সেইভাবে বিচার করছো; আমি কারো বিচার করি না। 16আর যদিও আমি বিচার করি, আমার বিচার সত্যি, কেননা আমি একা নই, কিন্তু আমি আছি এবং পিতা আছেন, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। 17আর তোমাদের শরীয়তেও লেখা আছে, দু’জনের সাক্ষ্য সত্যি। 18আমি নিজে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিই, আর পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন। 19তখন তারা তাঁকে বললো, তোমার পিতা কোথায়? জবাবে ঈসা বললেন, তোমরা আমাকেও জান না, আমার পিতাকেও জান না; যদি আমাকে জানতে, আমার পিতাকেও জানতে। 20এসব কথা তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসে উপদেশ দেবার সময়ে ভাণ্ডার-গৃহে বললেন; এবং কেউ তাঁকে ধরলো না, কারণ তখনও তাঁর সময় উপস্থিত হয় নি।
নিজের মৃত্যুর বিষয়ে ঈসা মসীহের ভবিষ্যদ্বাণী
21পরে তিনি আবার তাদেরকে বললেন, আমি যাচ্ছি, আর তোমরা আমার খোঁজ করবে ও তোমাদের গুনাহে মারা যাবে; আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা আসতে পার না। 22তখন ইহুদীরা বললো, এ কি আত্মঘাতী হবে? সেজন্য কি বলছে, আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা আসতে পার না? 23তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা অধঃস্থানের, আমি ঊর্ধ্বস্থানের; তোমরা এই দুনিয়ার, আমি এই দুনিয়ার নই। 24কেননা যদি বিশ্বাস না কর যে, আমিই তিনি, তবে তোমাদের গুনাহের মধ্যেই তোমরা মরবে। 25তখন তারা বললো, তুমি কে? ঈসা তাদেরকে বললেন, তা-ই তো প্রথম থেকে তোমাদেরকে বলছি। 26তোমাদের বিষয়ে বলবার ও বিচার করার অনেক কথা আছে; যা হোক, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি সত্য এবং আমি তাঁর কাছে যা যা শুনেছি, তা-ই দুনিয়াকে বলছি। 27তিনি যে তাদেরকে পিতার বিষয়ে বলছিলেন, তা তারা বুঝতে পারল না। 28তখন ঈসা বললেন, যখন তোমরা ইবনুল-ইনসানকে উঁচুতে তুলবে, তখন জানবে যে, আমিই তিনি, আর আমি নিজের থেকে কিছু করি না, কিন্তু পিতা যেমন আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন, সেই অনুসারে এসব কথা বলি। 29আর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আমার সঙ্গে সঙ্গে আছেন; তিনি আমাকে একা ছেড়ে দেন নি, কেননা আমি সব সময় তাঁর সন্তোষজনক কাজ করি।
30তিনি এসব কথা বললে পর অনেকে তাঁর উপর ঈমান আনলো।
সত্যিকারের সাহাবী
31অতএব যে ইহুদীরা তাঁর উপর ঈমান আনলো, তাদেরকে ঈসা বললেন, তোমরা যদি আমার কথায় স্থির থাক, তা হলে সত্যিই তোমরা আমার সাহাবী; 32আর তোমরা সেই সত্য জানবে এবং সেই সত্য তোমাদেরকে স্বাধীন করবে। 33তারা তাঁকে জবাবে বললো, আমরা ইব্রাহিমের বংশ, কখনও কারো গোলাম হই নি; আপনি কেমন করে বলছেন যে, তোমাদেরকে স্বাধীন করা যাবে?
34ঈসা জবাবে তাদেরকে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, যে কেউ গুনাহ্ করে, সে গুনাহ্র গোলাম। 35আর গোলাম বাড়িতে চিরকাল থাকে না, পুত্র চিরকাল থাকেন। 36অতএব পুত্র যদি তোমাদেরকে স্বাধীন করেন, তবে তোমরা প্রকৃতভাবে স্বাধীন হবে। 37আমি জানি, তোমরা ইব্রাহিমের বংশ; কিন্তু আমাকে হত্যা করতে চেষ্টা করছো, কারণ আমার কালাম তোমাদের অন্তরে স্থান পায় না। 38আমার পিতার কাছে আমি যা যা দেখেছি, তা-ই বলছি; আর তোমাদের পিতার কাছে তোমরা যা যা শুনেছ, তা-ই করছো।
ঈসা মসীহ্ ও হযরত ইব্রাহিম
39তারা জবাবে তাকে বললো, আমাদের পিতা ইব্রাহিম। ঈসা তাদেরকে বললেন, তোমরা যদি ইব্রাহিমের সন্তান হতে, তবে ইব্রাহিমের মতই কাজ করতে। 40কিন্তু আল্লাহ্র কাছে সত্য শুনে তোমাদেরকে জানিয়েছি যে আমি, আমাকেই হত্যা করতে চেষ্টা করছো; ইব্রাহিম এরকম করেন নি। 41তোমাদের পিতার কাজ তোমরা করছো। তারা তাঁকে বললো, আমরা জারজ সন্তান নই; আমাদের একমাত্র পিতা আছেন, তিনি আল্লাহ্। 42ঈসা তাদেরকে বললেন, আল্লাহ্ যদি তোমাদের পিতা হতেন, তবে তোমরা আমাকে মহব্বত করতে, কেননা আমি আল্লাহ্ থেকে বের হয়ে এসেছি; আমি তো নিজের থেকে আসি নি, কিন্তু তিনিই আমাকে প্রেরণ করেছেন। 43তোমরা কেন আমার কথা বোঝ না? কারণ এই যে, তোমরা আমার কালাম গ্রহণ করতে পার না। 44তোমরা তোমাদের পিতা শয়তানের এবং তোমাদের পিতার অভিলাষগুলো পালন করাই তোমাদের ইচ্ছা; সে আদি থেকেই নরহন্তা, কখনও সত্যে বাস করে নি, কারণ তার মধ্যে সত্য নেই। সে যখন মিথ্যা বলে, তখন নিজ থেকেই বলে, কেননা সে মিথ্যাবাদী ও মিথ্যার পিতা। 45কিন্তু আমি সত্য বলি, তাই তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর না। 46তোমাদের মধ্যে কে আমাকে গুনাহ্গার বলে প্রমাণ করতে পারে? যদি আমি সত্যি বলি, তবে তোমরা কেন আমার উপর ঈমান আন না? 47যে কেউ আল্লাহ্র, সে আল্লাহ্র কথাগুলো শুনে; এজন্যই তোমরা শোন না, কারণ তোমরা আল্লাহ্র নও।
48ইহুদীরা জবাবে তাঁকে বললো, আমরা কি ঠিকই বলি না যে, তুমি এক জন সামেরীয় ও তোমাকে বদ-রূহে পেয়েছে? 49জবাবে ঈসা বললেন, আমাকে বদ-রূহে পায় নি, কিন্তু আমি আমার পিতাকে সমাদর করি, আর তোমরা আমাকে অসম্মান কর। 50কিন্তু আমি আমার গৌরবের খোঁজ করি না; এক জন আছেন, যিনি খোঁজ করেন ও বিচার করেন। 51সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, কেউ যদি আমার কথা পালন করে, সে কখনও মৃত্যু দেখবে না। 52ইহুদীরা তাঁকে বললো, এখন জানলাম, তোমাকে বদ-রূহে পেয়েছে; ইব্রাহিম ও নবীরা ইন্তেকাল করেছেন; আর তুমি বলছো, কেউ যদি আমার কথা পালন করে, সে কখনও মৃত্যুর আস্বাদ পাবে না। 53তুমি কি আমাদের পূর্বপুরুষ ইব্রাহিমের চেয়ে বড়? তিনি তো ইন্তেকাল করেছেন এবং নবীরাও ইন্তেকাল করেছেন; তুমি নিজের বিষয়ে কি বল? 54জবাবে ঈসা বললেন, আমি যদি নিজেকে গৌরবান্বিত করি, তবে আমার গৌরব কিছুই নয়; আমার পিতাই আমাকে গৌরবান্বিত করছেন, যাঁর বিষয়ে তোমরা বলে থাক যে, তিনি তোমাদের আল্লাহ্; 55আর তোমরা তাঁকে জান নি; কিন্তু আমি তাঁকে জানি; আর আমি যদি বলি যে, তাঁকে জানি না, তবে তোমাদেরই মত মিথ্যাবাদী হব; কিন্তু আমি তাঁকে জানি এবং তাঁর কালাম পালন করি। 56তোমাদের পূর্বপুরুষ ইব্রাহিম আমার দিন দেখবার আশায় উল্লসিত হয়েছিলেন এবং তিনি তা দেখলেন ও আনন্দ করলেন। 57তখন ইহুদীরা তাঁকে বললো, তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বছর হয় নি, তুমি কি ইব্রাহিমকে দেখেছ? 58ঈসা তাঁদেরকে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, ইব্রাহিমের জন্মের আগে থেকেই আমি আছি। 59তখন তারা তাঁর উপর ছুড়ে মারবার জন্য পাথর তুলে নিল, কিন্তু ঈসা নিজেকে গোপন করে বায়তুল-মোকাদ্দস থেকে বের হয়ে গেলেন।
Currently Selected:
:
Highlight
Share
Copy
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Kitabul Muqaddas (BACIB) Copyright © Biblical Aids to Churches in Bangladesh, 2013