লূক 11
11
মুনাজাতের বিষয়ে শিক্ষা
1এক সময়ে তিনি কোন স্থানে মুনাজাত করছিলেন; যখন শেষ করলেন, তাঁর সাহাবীদের মধ্যে এক জন তাঁকে বললেন, প্রভু, আমাদেরকে মুনাজাত করতে শিক্ষা দিন, যেমন ইয়াহিয়াও তাঁর সাহাবী— দেরকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। 2তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমরা যখন মুনাজাত কর, তখন বলো,
হে আমাদের বেহেশতী পিতা,
তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক।
3তোমার রাজ্য আসুক।
আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য প্রতিদিন আমাদেরকে দাও।
4আর আমাদের গুনাহ্ মাফ কর;
কেননা আমরাও আমাদের প্রত্যেক অপরাধীকে মাফ করি।
আর আমাদের পরীক্ষাতে এনো না।
অবিরত মুনাজাত করা
5আর তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের মধ্যে কারো যদি বন্ধু থাকে, আর সে যদি মধ্যরাত্রে তার কাছে গিয়ে বলে, ‘বন্ধু আমাকে তিনখানা রুটি ধার দাও, 6কেননা আমার এক বন্ধু পথে যেতে যেতে আমার কাছে এসেছেন, তাঁর সম্মুখে রাখার মত আমার কিছুই নেই; 7তা হলে সেই ব্যক্তি ভিতরে থেকে কি এমন উত্তর দেবে, ‘আমাকে কষ্ট দিও না, এখন দরজা বন্ধ এবং আমার সন্তানেরা আমার কাছে শুয়ে আছে, আমি উঠে তোমাকে কিছু দিতে পারি না?’ 8আমি তোমাদেরকে বলছি, সে যদিও বন্ধু বলে উঠে তা না দেয়, তবুও সে বারংবার অনুরোধ করছে বলে উঠে তার প্রয়োজন অনুসারে তা তাকে দেবে।
9আর আমি তোমাদেরকে বলছি, যাচ্ঞা কর, তোমাদেরকে দেওয়া যাবে, খোঁজ কর, পাবে; দ্বারে আঘাত কর, তোমাদের জন্য খুলে দেওয়া যাবে। 10কেননা যে কেউ যাচ্ঞা করে, সে গ্রহণ করে এবং যে খোঁজ করে, সে পায়; আর যে দ্বারে আঘাত করে, তার জন্য খুলে দেওয়া যায়। 11তোমাদের মধ্যে এমন পিতা কে, যার পুত্র রুটি চাইলে তাকে পাথর দেবে? কিংবা মাছ চাইলে মাছের পরিবর্তে সাপ দেবে? 12কিংবা ডিম চাইলে তাকে বৃশ্চিক দেবে? 13অতএব তোমরা মন্দ হয়েও যদি তোমাদের সন্তানদেরকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করতে জান, তবে এটা কত বেশি নিশ্চিত যে, বেহেশতী পিতা, যারা তাঁর কাছে যাচ্ঞা করে, তাদেরকে পাক-রূহ্ দান করবেন।
ঈসা মসীহ্ ও বেল্সবূল
14আর তিনি একটা বোবা বদ-রূহ্ ছাড়িয়েছিলেন। বদ-রূহ্ বের হলে সেই বোবা কথা বলতে লাগল; তাতে লোকেরা আশ্চর্য জ্ঞান করলো। 15কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ কেউ বললো, এই ব্যক্তি বদ-রূহ্দের অধিপতি বেল্সবূলের দ্বারা বদ-রূহ্ ছাড়ায়। 16আর কেউ কেউ পরীক্ষা করার জন্য তাঁর কাছে আসমান থেকে কোন চিহ্ন চাইল। 17কিন্তু তিনি তাদের মনের ভাব জেনে তাদেরকে বললেন, যে কোন রাজ্য নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয়, তা উচ্ছিন্ন হয়, এক গৃহ অন্য গৃহের বিপক্ষ হলে তার পতন ঘটে। 18আর শয়তানও যদি নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয়, তবে তার রাজ্য কিভাবে স্থির থাকবে? কেননা তোমরা বলছো, আমি বেল্সবূলের দ্বারা বদ-রূহ্ ছাড়াই। 19আর আমি যদি বেল্সবূলের দ্বারা বদ-রূহ্ ছাড়াই, তবে তোমাদের লোকেরা কার দ্বারা ছাড়ায়? তোমরা ঠিক কথা বলছো কিনা তার জন্য তারাই তোমাদের বিচার করবে। 20কিন্তু আমি যদি আল্লাহ্র অঙ্গুলি দ্বারা বদ-রূহ্ ছাড়াই, তবে আল্লাহ্র রাজ্য তো তোমাদের কাছে এসে পড়েছে। 21সেই বলবান ব্যক্তি যখন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত থেকে নিজের বাড়ি রক্ষা করে, তখন তার সম্পত্তি নিরাপদে থাকে। 22কিন্তু যে ব্যক্তি তার থেকে বেশি বলবান, সে এসে যখন তাকে পরাজিত করে, তবে যে অস্ত্রশস্ত্রের উপর সে ভরসা করেছিল তা হরণ করে নেয়, আর লুট ভাগ করে নেয়। 23যে আমার সপক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষ এবং যে আমার সঙ্গে কুড়ায় না, সে ছাড়িয়ে ফেলে।
নাপাক রূহের ফিরে আসা
24যখন নাপাক রূহ্ মানুষ থেকে বের হয়ে যায়, তখন পানিবিহীন নানা স্থান দিয়ে ভ্রমণ করে বিশ্রামের খোঁজ করে; কিন্তু না পেয়ে বলে, আমি যেখান থেকে বের হয়ে এসেছি, আমার সেই বাড়িতে ফিরে যাই। 25পরে এসে তা মার্জিত ও সাজানো দেখতে পায়। 26তখন সে গিয়ে নিজের থেকে দুষ্ট অপর সাতটা রূহ্কে সঙ্গে নিয়ে আসে এবং তারা সেই স্থানে প্রবেশ করে বাস করে; তাতে সেই মানুষের প্রথম দশা থেকে শেষ দশা আরও মন্দ হয়।
27তিনি এসব কথা বলছেন, এমন সময়ে ভিড়ের মধ্য থেকে কোন একটি স্ত্রীলোক চিৎকার করে তাঁকে বললো, ধন্য সেই গর্ভ, যা আপনাকে ধারণ করেছিল, আর সেই স্তন, যার দুগ্ধ আপনি পান করেছিলেন। 28তিনি বললেন, কিন্তু এর চেয়ে বরং ধন্য তারাই, যারা আল্লাহ্র কালাম শোনে ও তা পালন করে।
হযরত ইউনুসের চিহ্ন
29পরে তাঁর কাছে আরও অনেক লোকের জমায়েত হতে থাকলে তিনি বলতে লাগলেন, এই কালের লোকেরা দুষ্ট। এরা চিহ্নের খোঁজ করে, কিন্তু ইউনুসের চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন তাদেরকে দেওয়া যাবে না। 30কারণ ইউনুস যেমন নিনেভের লোকদের কাছে চিহ্নস্বরূপ হয়েছিলেন, তেমনি ইবনুল-ইনসানও এই কালের লোকদের কাছে চিহ্ন হবেন। 31বিচারে সময় দক্ষিণ দেশের রাণী এই কালের লোকদের সঙ্গে উঠে এদেরকে দোষী করবেন, কেননা সোলায়মানের জ্ঞানের কথা শুনবার জন্য তিনি দুনিয়ার প্রান্ত থেকে এসেছিলেন; আর দেখ, সোলায়মানের চেয়েও মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। 32নিনেভের লোকেরা বিচারের সময়ে এই কালের লোকদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে এদেরকে দোষী করবে; কেননা তারা ইউনুসের তবলিগের ফলে মন ফিরিয়েছিল, আর দেখ, ইউনুস থেকে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন।
শরীরের আলো
33প্রদীপ জ্বেলে কেউ গুপ্ত কুঠরীতে কিংবা কাঠার নিচে রাখে না, কিন্তু প্রদীপ-আসনের উপরেই রাখে, যেন যারা ভিতরে যায় তারা আলো দেখতে পায়। 34তোমার চোখই শরীরের প্রদীপ; তোমার চোখ যখন সরল হয়, তখন তোমার সমস্ত শরীরও আলোতে পূর্ণ হয়; কিন্তু চোখ মন্দ হলে তোমার শরীরও অন্ধকারে পূর্ণ হয়। 35অতএব দেখো, তোমার অন্তরে যে আলো আছে, তা অন্ধকার কি না। 36বাস্তবিক, তোমার সমস্ত শরীর যদি আলোতে পূর্ণ হয়, কোনও অংশ অন্ধকারময় না থাকে, তবে প্রদীপ যেমন নিজের তেজে তোমাকে আলো দান করে, তেমনি তোমার শরীর সমপূর্ণভাবে আলোতে পূর্ণ হবে।
ফরীশী ও আলেমদের প্রতি ঈসা মসীহের তিরস্কার
37তিনি কথা বলছেন এমন সময়ে এক জন ফরীশী তাঁকে ভোজনের দাওয়াত করলো; আর তিনি ভিতরে গিয়ে ভোজনে বসলেন। 38ফরীশী দেখে আশ্চর্য জ্ঞান করলো যে, ভোজনের আগে তিনি গোসল করেন নি। 39কিন্তু প্রভু তাকে বললেন, তোমরা ফরীশীরা তো পানপাত্রের ও ভোজনপাত্রের বাইরের দিকটা পরিষ্কার করে থাক, কিন্তু তোমাদের ভিতরে দৌরাত্ম্য ও নাফরমানীতে ভরা। 40নির্বোধেরা, যিনি বাইরের ভাগ তৈরি করেছেন, তিনি কি ভিতরের ভাগও তৈরি করেন নি? 41বরং ভিতরে যা যা আছে, তা দান কর, আর দেখ, তোমাদের পক্ষে সকলই পাক-পবিত্র।
42কিন্তু ফরীশীরা, ধিক্ তোমাদেরকে, কেননা তোমরা পুদিনা, তেজপাতা ও সকল প্রকার শাকের দশ ভাগের এক ভাগ দান করে থাক, আর ন্যায়বিচার ও আল্লাহ্-প্রেম উপেক্ষা করে থাক; কিন্তু এসব পালন করা এবং ঐ সমস্ত পরিত্যাগ না করা তোমাদের উচিত ছিল। 43ফরীশীরা, ধিক্ তোমাদেরকে, কেননা তোমরা মজলিস-খানায় প্রধান আসন ও হাট বাজারে লোকদের সালাম পেতে ভালবাস। 44ধিক্ তোমাদেরকে, কারণ তোমরা এমন গুপ্ত কবরের মত, যার উপর দিয়ে লোকে না জেনে যাতায়াত করে।
45তখন আলেমদের এক জন জবাবে তাঁকে বললো, হুজুর, এই কথা বলে আপনি আমাদেরও অপমান করছেন। 46তিনি বললেন, আলেমেরা, ধিক্ তোমাদেরকেও, কেননা তোমরা মানুষের উপরে দুর্বহ বোঝা চাপিয়ে দিয়ে থাক, কিন্তু নিজেরা একটি আঙ্গুল দিয়ে সেসব বোঝা স্পর্শ কর না। 47ধিক্ তোমাদেরকে, কেননা তোমরা নবীদের কবর গেঁথে থাক, আর তোমাদের পূর্বপুরুষেরা তাঁদেরকে খুন করেছিল। 48সুতরাং তোমরা সাক্ষী হচ্ছ এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাজের অনুমোদন করছো; কেননা তারা তাঁদেরকে খুন করেছিল, আর তোমরা তাঁদের কবর গেঁথে থাক। 49এই কারণ আল্লাহ্র প্রজ্ঞাও বললেন, আমি তাদের কাছে নবী ও প্রেরিতদেরকে প্রেরণ করবো, আর তাদের মধ্য থেকে তারা কাউকে কাউকে খুন করবে ও নির্যাতন করবে, 50যেন দুনিয়া পত্তনের সময় থেকে যত নবীর রক্তপাত হয়েছে, তার প্রতিশোধ এই কালের লোকদের কাছ থেকে নেওয়া যায়— 51হাবিলের রক্ত থেকে সেই জাকারিয়ার রক্ত পর্যন্ত যিনি কোরবানগাহ্ ও বায়তুল-মোকাদ্দসের মধ্যস্থানে নিহত হয়েছিলেন— হ্যাঁ, আমি তোমাদেরকে বলছি, এই কালের লোকদের কাছ থেকে তার প্রতিশোধ নেওয়া যাবে। 52আলেমেরা, ধিক্ তোমাদেরকে, কেননা তোমরা জ্ঞানের চাবি হরণ করে নিয়েছ; নিজেরা প্রবেশ করলে না এবং যারা প্রবেশ করছিল, তাদেরকেও বাধা দিলে।
53তিনি সেই স্থান থেকে বের হয়ে আসলে আলেম ও ফরীশীরা তাঁকে অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করতে ও নানা বিষয়ে কথা বলাবার জন্য উত্তেজিত করতে লাগল, 54তাঁর মুখের কথায় তাঁকে ফাঁদে ফেলবার জন্য অপেক্ষা করে রইলো।
Currently Selected:
লূক 11: BACIB
Highlight
Share
Copy
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Kitabul Muqaddas (BACIB) Copyright © Biblical Aids to Churches in Bangladesh, 2013
লূক 11
11
মুনাজাতের বিষয়ে শিক্ষা
1এক সময়ে তিনি কোন স্থানে মুনাজাত করছিলেন; যখন শেষ করলেন, তাঁর সাহাবীদের মধ্যে এক জন তাঁকে বললেন, প্রভু, আমাদেরকে মুনাজাত করতে শিক্ষা দিন, যেমন ইয়াহিয়াও তাঁর সাহাবী— দেরকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। 2তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমরা যখন মুনাজাত কর, তখন বলো,
হে আমাদের বেহেশতী পিতা,
তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক।
3তোমার রাজ্য আসুক।
আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য প্রতিদিন আমাদেরকে দাও।
4আর আমাদের গুনাহ্ মাফ কর;
কেননা আমরাও আমাদের প্রত্যেক অপরাধীকে মাফ করি।
আর আমাদের পরীক্ষাতে এনো না।
অবিরত মুনাজাত করা
5আর তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের মধ্যে কারো যদি বন্ধু থাকে, আর সে যদি মধ্যরাত্রে তার কাছে গিয়ে বলে, ‘বন্ধু আমাকে তিনখানা রুটি ধার দাও, 6কেননা আমার এক বন্ধু পথে যেতে যেতে আমার কাছে এসেছেন, তাঁর সম্মুখে রাখার মত আমার কিছুই নেই; 7তা হলে সেই ব্যক্তি ভিতরে থেকে কি এমন উত্তর দেবে, ‘আমাকে কষ্ট দিও না, এখন দরজা বন্ধ এবং আমার সন্তানেরা আমার কাছে শুয়ে আছে, আমি উঠে তোমাকে কিছু দিতে পারি না?’ 8আমি তোমাদেরকে বলছি, সে যদিও বন্ধু বলে উঠে তা না দেয়, তবুও সে বারংবার অনুরোধ করছে বলে উঠে তার প্রয়োজন অনুসারে তা তাকে দেবে।
9আর আমি তোমাদেরকে বলছি, যাচ্ঞা কর, তোমাদেরকে দেওয়া যাবে, খোঁজ কর, পাবে; দ্বারে আঘাত কর, তোমাদের জন্য খুলে দেওয়া যাবে। 10কেননা যে কেউ যাচ্ঞা করে, সে গ্রহণ করে এবং যে খোঁজ করে, সে পায়; আর যে দ্বারে আঘাত করে, তার জন্য খুলে দেওয়া যায়। 11তোমাদের মধ্যে এমন পিতা কে, যার পুত্র রুটি চাইলে তাকে পাথর দেবে? কিংবা মাছ চাইলে মাছের পরিবর্তে সাপ দেবে? 12কিংবা ডিম চাইলে তাকে বৃশ্চিক দেবে? 13অতএব তোমরা মন্দ হয়েও যদি তোমাদের সন্তানদেরকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করতে জান, তবে এটা কত বেশি নিশ্চিত যে, বেহেশতী পিতা, যারা তাঁর কাছে যাচ্ঞা করে, তাদেরকে পাক-রূহ্ দান করবেন।
ঈসা মসীহ্ ও বেল্সবূল
14আর তিনি একটা বোবা বদ-রূহ্ ছাড়িয়েছিলেন। বদ-রূহ্ বের হলে সেই বোবা কথা বলতে লাগল; তাতে লোকেরা আশ্চর্য জ্ঞান করলো। 15কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ কেউ বললো, এই ব্যক্তি বদ-রূহ্দের অধিপতি বেল্সবূলের দ্বারা বদ-রূহ্ ছাড়ায়। 16আর কেউ কেউ পরীক্ষা করার জন্য তাঁর কাছে আসমান থেকে কোন চিহ্ন চাইল। 17কিন্তু তিনি তাদের মনের ভাব জেনে তাদেরকে বললেন, যে কোন রাজ্য নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয়, তা উচ্ছিন্ন হয়, এক গৃহ অন্য গৃহের বিপক্ষ হলে তার পতন ঘটে। 18আর শয়তানও যদি নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয়, তবে তার রাজ্য কিভাবে স্থির থাকবে? কেননা তোমরা বলছো, আমি বেল্সবূলের দ্বারা বদ-রূহ্ ছাড়াই। 19আর আমি যদি বেল্সবূলের দ্বারা বদ-রূহ্ ছাড়াই, তবে তোমাদের লোকেরা কার দ্বারা ছাড়ায়? তোমরা ঠিক কথা বলছো কিনা তার জন্য তারাই তোমাদের বিচার করবে। 20কিন্তু আমি যদি আল্লাহ্র অঙ্গুলি দ্বারা বদ-রূহ্ ছাড়াই, তবে আল্লাহ্র রাজ্য তো তোমাদের কাছে এসে পড়েছে। 21সেই বলবান ব্যক্তি যখন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত থেকে নিজের বাড়ি রক্ষা করে, তখন তার সম্পত্তি নিরাপদে থাকে। 22কিন্তু যে ব্যক্তি তার থেকে বেশি বলবান, সে এসে যখন তাকে পরাজিত করে, তবে যে অস্ত্রশস্ত্রের উপর সে ভরসা করেছিল তা হরণ করে নেয়, আর লুট ভাগ করে নেয়। 23যে আমার সপক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষ এবং যে আমার সঙ্গে কুড়ায় না, সে ছাড়িয়ে ফেলে।
নাপাক রূহের ফিরে আসা
24যখন নাপাক রূহ্ মানুষ থেকে বের হয়ে যায়, তখন পানিবিহীন নানা স্থান দিয়ে ভ্রমণ করে বিশ্রামের খোঁজ করে; কিন্তু না পেয়ে বলে, আমি যেখান থেকে বের হয়ে এসেছি, আমার সেই বাড়িতে ফিরে যাই। 25পরে এসে তা মার্জিত ও সাজানো দেখতে পায়। 26তখন সে গিয়ে নিজের থেকে দুষ্ট অপর সাতটা রূহ্কে সঙ্গে নিয়ে আসে এবং তারা সেই স্থানে প্রবেশ করে বাস করে; তাতে সেই মানুষের প্রথম দশা থেকে শেষ দশা আরও মন্দ হয়।
27তিনি এসব কথা বলছেন, এমন সময়ে ভিড়ের মধ্য থেকে কোন একটি স্ত্রীলোক চিৎকার করে তাঁকে বললো, ধন্য সেই গর্ভ, যা আপনাকে ধারণ করেছিল, আর সেই স্তন, যার দুগ্ধ আপনি পান করেছিলেন। 28তিনি বললেন, কিন্তু এর চেয়ে বরং ধন্য তারাই, যারা আল্লাহ্র কালাম শোনে ও তা পালন করে।
হযরত ইউনুসের চিহ্ন
29পরে তাঁর কাছে আরও অনেক লোকের জমায়েত হতে থাকলে তিনি বলতে লাগলেন, এই কালের লোকেরা দুষ্ট। এরা চিহ্নের খোঁজ করে, কিন্তু ইউনুসের চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন তাদেরকে দেওয়া যাবে না। 30কারণ ইউনুস যেমন নিনেভের লোকদের কাছে চিহ্নস্বরূপ হয়েছিলেন, তেমনি ইবনুল-ইনসানও এই কালের লোকদের কাছে চিহ্ন হবেন। 31বিচারে সময় দক্ষিণ দেশের রাণী এই কালের লোকদের সঙ্গে উঠে এদেরকে দোষী করবেন, কেননা সোলায়মানের জ্ঞানের কথা শুনবার জন্য তিনি দুনিয়ার প্রান্ত থেকে এসেছিলেন; আর দেখ, সোলায়মানের চেয়েও মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। 32নিনেভের লোকেরা বিচারের সময়ে এই কালের লোকদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে এদেরকে দোষী করবে; কেননা তারা ইউনুসের তবলিগের ফলে মন ফিরিয়েছিল, আর দেখ, ইউনুস থেকে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন।
শরীরের আলো
33প্রদীপ জ্বেলে কেউ গুপ্ত কুঠরীতে কিংবা কাঠার নিচে রাখে না, কিন্তু প্রদীপ-আসনের উপরেই রাখে, যেন যারা ভিতরে যায় তারা আলো দেখতে পায়। 34তোমার চোখই শরীরের প্রদীপ; তোমার চোখ যখন সরল হয়, তখন তোমার সমস্ত শরীরও আলোতে পূর্ণ হয়; কিন্তু চোখ মন্দ হলে তোমার শরীরও অন্ধকারে পূর্ণ হয়। 35অতএব দেখো, তোমার অন্তরে যে আলো আছে, তা অন্ধকার কি না। 36বাস্তবিক, তোমার সমস্ত শরীর যদি আলোতে পূর্ণ হয়, কোনও অংশ অন্ধকারময় না থাকে, তবে প্রদীপ যেমন নিজের তেজে তোমাকে আলো দান করে, তেমনি তোমার শরীর সমপূর্ণভাবে আলোতে পূর্ণ হবে।
ফরীশী ও আলেমদের প্রতি ঈসা মসীহের তিরস্কার
37তিনি কথা বলছেন এমন সময়ে এক জন ফরীশী তাঁকে ভোজনের দাওয়াত করলো; আর তিনি ভিতরে গিয়ে ভোজনে বসলেন। 38ফরীশী দেখে আশ্চর্য জ্ঞান করলো যে, ভোজনের আগে তিনি গোসল করেন নি। 39কিন্তু প্রভু তাকে বললেন, তোমরা ফরীশীরা তো পানপাত্রের ও ভোজনপাত্রের বাইরের দিকটা পরিষ্কার করে থাক, কিন্তু তোমাদের ভিতরে দৌরাত্ম্য ও নাফরমানীতে ভরা। 40নির্বোধেরা, যিনি বাইরের ভাগ তৈরি করেছেন, তিনি কি ভিতরের ভাগও তৈরি করেন নি? 41বরং ভিতরে যা যা আছে, তা দান কর, আর দেখ, তোমাদের পক্ষে সকলই পাক-পবিত্র।
42কিন্তু ফরীশীরা, ধিক্ তোমাদেরকে, কেননা তোমরা পুদিনা, তেজপাতা ও সকল প্রকার শাকের দশ ভাগের এক ভাগ দান করে থাক, আর ন্যায়বিচার ও আল্লাহ্-প্রেম উপেক্ষা করে থাক; কিন্তু এসব পালন করা এবং ঐ সমস্ত পরিত্যাগ না করা তোমাদের উচিত ছিল। 43ফরীশীরা, ধিক্ তোমাদেরকে, কেননা তোমরা মজলিস-খানায় প্রধান আসন ও হাট বাজারে লোকদের সালাম পেতে ভালবাস। 44ধিক্ তোমাদেরকে, কারণ তোমরা এমন গুপ্ত কবরের মত, যার উপর দিয়ে লোকে না জেনে যাতায়াত করে।
45তখন আলেমদের এক জন জবাবে তাঁকে বললো, হুজুর, এই কথা বলে আপনি আমাদেরও অপমান করছেন। 46তিনি বললেন, আলেমেরা, ধিক্ তোমাদেরকেও, কেননা তোমরা মানুষের উপরে দুর্বহ বোঝা চাপিয়ে দিয়ে থাক, কিন্তু নিজেরা একটি আঙ্গুল দিয়ে সেসব বোঝা স্পর্শ কর না। 47ধিক্ তোমাদেরকে, কেননা তোমরা নবীদের কবর গেঁথে থাক, আর তোমাদের পূর্বপুরুষেরা তাঁদেরকে খুন করেছিল। 48সুতরাং তোমরা সাক্ষী হচ্ছ এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাজের অনুমোদন করছো; কেননা তারা তাঁদেরকে খুন করেছিল, আর তোমরা তাঁদের কবর গেঁথে থাক। 49এই কারণ আল্লাহ্র প্রজ্ঞাও বললেন, আমি তাদের কাছে নবী ও প্রেরিতদেরকে প্রেরণ করবো, আর তাদের মধ্য থেকে তারা কাউকে কাউকে খুন করবে ও নির্যাতন করবে, 50যেন দুনিয়া পত্তনের সময় থেকে যত নবীর রক্তপাত হয়েছে, তার প্রতিশোধ এই কালের লোকদের কাছ থেকে নেওয়া যায়— 51হাবিলের রক্ত থেকে সেই জাকারিয়ার রক্ত পর্যন্ত যিনি কোরবানগাহ্ ও বায়তুল-মোকাদ্দসের মধ্যস্থানে নিহত হয়েছিলেন— হ্যাঁ, আমি তোমাদেরকে বলছি, এই কালের লোকদের কাছ থেকে তার প্রতিশোধ নেওয়া যাবে। 52আলেমেরা, ধিক্ তোমাদেরকে, কেননা তোমরা জ্ঞানের চাবি হরণ করে নিয়েছ; নিজেরা প্রবেশ করলে না এবং যারা প্রবেশ করছিল, তাদেরকেও বাধা দিলে।
53তিনি সেই স্থান থেকে বের হয়ে আসলে আলেম ও ফরীশীরা তাঁকে অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করতে ও নানা বিষয়ে কথা বলাবার জন্য উত্তেজিত করতে লাগল, 54তাঁর মুখের কথায় তাঁকে ফাঁদে ফেলবার জন্য অপেক্ষা করে রইলো।
Currently Selected:
:
Highlight
Share
Copy
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Kitabul Muqaddas (BACIB) Copyright © Biblical Aids to Churches in Bangladesh, 2013