মার্ক 13
13
যুগের শেষের দিনগুলো
(মথি 24:1-35; লূক 21:5-33)
1যীশু উপাসনা-ঘর থেকে যখন বের হয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাঁর একজন শিষ্য তাঁকে বললেন, “গুরু, দেখুন, কত বড় বড় পাথর, আর কি সুন্দর সুন্দর দালান!”
2যীশু তাঁকে বললেন, “তুমি তো এই সব বড় বড় দালান দেখছ, কিন্তু এর একটা পাথরও আর একটা পাথরের উপরে থাকবে না; সমস্তই ভেংগে ফেলা হবে।”
3পরে যীশু যখন উপাসনা-ঘরের উল্টাদিকে জৈতুন পাহাড়ের উপরে বসে ছিলেন তখন পিতর, যাকোব, যোহন ও আন্দ্রিয় তাঁকে গোপনে জিজ্ঞাসা করলেন, 4“আপনি আমাদের বলুন, কখন এই সব হবে? কোন্ চিহ্ন দেখে আমরা বুঝতে পারব এই সব পূর্ণ হবার সময় এসেছে?”
5যীশু তাঁদের বললেন, “দেখো, কেউ যেন তোমাদের না ঠকায়। 6অনেকেই আমার নাম নিয়ে এসে বলবে, ‘আমিই সেই’ এবং অনেককে ঠকাবে। 7যখন তোমরা যুদ্ধের আওয়াজ ও যুদ্ধের খবরাখবর শুনবে তখন ভয় পেয়ো না। এই সব হবেই, কিন্তু তখনও শেষ নয়। 8এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে, এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। অনেক জায়গায় ভূমিকম্প ও দুর্ভিক্ষ হবে। কিন্তু এই সব কেবল যন্ত্রণার আরম্ভ।
9“তোমরা সতর্ক থেকো। লোকে তোমাদের বিচার-সভার লোকদের হাতে ধরিয়ে দেবে এবং সমাজ-ঘরে বেত মারবে। আমার জন্য দেশের শাসনকর্তা ও রাজাদের সামনে তোমাদের দাঁড়াতে হবে। তাঁদের সামনে আমার বিষয়ে তোমাদের সাক্ষ্য দিতে হবে। 10সমস্ত জাতির কাছে প্রথমে ঈশ্বরের দেওয়া সুখবর প্রচার করতে হবে। 11যখন তোমাদের ধরে বিচারের জন্য নিয়ে যাবে তখন কি বলতে হবে তা আগে থেকে চিন্তা কোরো না। সেই সময়ে যে কথা তোমাদের বলে দেওয়া হবে তোমরা তা-ই বলবে, কারণ তোমরাই যে বলবে তা নয় বরং পবিত্র আত্মাই কথা বলবেন।
12“ভাই ভাইকে, বাবা ছেলেকে মেরে ফেলবার জন্য ধরিয়ে দেবে। ছেলেমেয়েরা মা-বাবার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তাদের খুন করাবে। 13আমার জন্য সবাই তোমাদের ঘৃণা করবে, কিন্তু যে শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে সে উদ্ধার পাবে।
14“সর্বনাশা ঘৃণার জিনিস যেখানে থাকা উচিত নয়, তোমরা যখন তা সেখানে থাকতে দেখবে-যে পড়ে সে বুঝুক-তখন যারা যিহূদিয়াতে থাকবে তারা পাহাড়ী এলাকায় পালিয়ে যাক। 15যে ছাদের উপরে থাকবে সে কিছু নেবার জন্য নীচে নেমে ঘরে না ঢুকুক। 16যে ক্ষেতের মধ্যে থাকবে সে গায়ের চাদর নেওয়ার জন্য না ফিরুক। 17তখন যারা গর্ভবতী আর যারা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ায় তাদের অবস্থা কি ভীষণই না হবে! 18প্রার্থনা কর যেন এই সমস্ত শীতকালে না হয়, 19কারণ সেই সময় এমন কষ্ট হবে যা জগতের সৃষ্টি থেকে এই পর্যন্ত হয় নি এবং তার পরেও আর হবে না। 20প্রভু যদি সেই দিনগুলো কমিয়ে না দিতেন তবে কেউই বাঁচত না। কিন্তু তাঁর বাছাই করা লোকদের জন্য সেই দিনগুলো ঈশ্বর কমিয়ে দিয়েছেন। 21সেই সময় যদি কেউ তোমাদের বলে, ‘দেখ, মশীহ এখানে,’ বা ‘দেখ, মশীহ ওখানে,’ তোমরা বিশ্বাস কোরো না; 22কারণ ভণ্ড মশীহেরা ও ভণ্ড নবীরা আসবে এবং অনেক আশ্চর্য আশ্চর্য কাজ করবে, যেন ঈশ্বরের বাছাই করা লোকদের সম্ভব হলে ঠকাতে পারে। 23তোমরা কিন্তু সতর্ক থেকো। আমি তোমাদের আগেই সব কিছু বলে রাখলাম।
24“সেই সময়ের কষ্টের ঠিক পরেই সূর্য অন্ধকার হয়ে যাবে, চাঁদ আর আলো দেবে না, 25তারাগুলো আকাশ থেকে খসে পড়ে যাবে এবং চাঁদ- সূর্য-তারা আর স্থির থাকবে না। 26সেই সময়ে লোকেরা মনুষ্যপুত্রকে মহাশক্তি ও মহিমার সংগে মেঘের মধ্যে পৃথিবীতে আসতে দেখবে। 27তিনি তাঁর দূতদের পাঠিয়ে পৃথিবীর এক সীমা থেকে অন্য সীমা পর্যন্ত চারদিক থেকে ঈশ্বরের সব বাছাই করা লোক জড়ো করবেন।
28“ডুমুর গাছ দেখে শিক্ষা লাভ কর। যখন তার ডালপালা নরম হয়ে তাতে পাতা বের হয় তখন তোমরা জানতে পার যে, গরমকাল এসেছে। 29সেইভাবে যখন তোমরা দেখবে এই সব ঘটছে তখন বুঝতে পারবে যে, মনুষ্যপুত্র কাছে এসে গেছেন, এমন কি, দরজায় উপস্থিত। 30আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যখন এই সব হবে তখনও এই কালের কিছু লোক বেঁচে থাকবে। 31আকাশ ও পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আমার কথা চিরদিন থাকবে।
মনুষ্যপুত্র কখন আসবেন?
(মথি 24:36-44)
32“সেই দিন ও সেই সময়ের কথা কেউই জানে না-স্বর্গের দূতেরাও না, পুত্রও না, কেবল পিতাই জানেন। 33তোমরা সাবধান হও, সতর্ক থাক ও প্রার্থনা কর, কারণ সেই দিন কখন আসবে তা তোমরা জান না। 34সেই দিনটা আসবে এমন একজন লোকের মত করে যিনি বিদেশে যাচ্ছেন। বাড়ী ছেড়ে যাবার আগে তিনি দাসদের হাতে সব দায়িত্ব দিলেন। তিনি প্রত্যেক দাসকে তার কাজ দিলেন এবং দারোয়ানকে জেগে থাকতে বললেন।
35“তোমরাও এইভাবে জেগে থাক, কারণ বাড়ীর কর্তা সন্ধ্যায়, কি দুপুর রাতে, কি ভোর রাতে, কি সকালে আসবেন তা তোমরা জান না। 36হঠাৎ তিনি এসে যেন না দেখেন তোমরা ঘুমিয়ে রয়েছ। 37তোমাদের যা বলছি তা সবাইকে বলি, জেগে থাক।”
Currently Selected:
মার্ক 13: SBCL
Highlight
Share
Copy

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
© The Bangladesh Bible Society, 2000