আদিপুস্তক 9

9
1পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁহার পুত্রগণকে এই আশীর্ব্বাদ করিলেন, তোমরা প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও, পৃথিবী পরিপূর্ণ কর। 2পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণী ও আকাশের যাবতীয় পক্ষী তোমাদের হইতে ভীত ও ত্রাসযুক্ত হইবে; সমস্ত ভূচর জীব ও সমুদ্রের সমস্ত মৎস্যশুদ্ধ সে সকল তোমাদেরই হস্তে সমর্পিত। 3প্রত্যেক গমনশীল প্রাণী তোমাদের খাদ্য হইবে; আমি হরিৎ ওষধির ন্যায় সে সকল তোমাদিগকে দিলাম। 4কিন্তু সপ্রাণ অর্থাৎ সরক্ত মাংস ভোজন করিও না। 5আর তোমাদের রক্তপাত হইলে আমি তোমাদের প্রাণের পক্ষে তাহার পরিশোধ অবশ্য লইব; সকল পশুর নিকটে তাহার পরিশোধ লইব, এবং মনুষ্যের ভ্রাতা মনুষ্যের নিকটে আমি মনুষ্যের প্রাণের পরিশোধ লইব। 6যে কেহ মনুষ্যের রক্তপাত করিবে, মনুষ্য কর্ত্তৃক তাহার রক্তপাত করা যাইবে; কেননা ঈশ্বর আপন প্রতিমূর্ত্তিতে মনুষ্যকে নির্ম্মাণ করিয়াছেন। 7তোমরা প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও, পৃথিবীকে প্রাণিময় কর, ও তন্মধ্যে বর্দ্ধিষ্ণু হও।
8পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁহার সঙ্গী পুত্রগণকে কহিলেন, দেখ, 9তোমাদের সহিত, তোমাদের ভাবী বংশের সহিত ও তোমাদের সঙ্গী যাবতীয় প্রাণীর সহিত, 10পক্ষী এবং গ্রাম্য ও বন্য পশু, পৃথিবীস্থ যত প্রাণী জাহাজ হইতে বাহির হইয়াছে, তাহাদের সহিত আমি আমার নিয়ম স্থির করি। 11আমি তোমাদের সহিত আমার নিয়ম স্থির করি; জলপ্লাবন দ্বারা সমস্ত প্রাণী আর উচ্ছিন্ন হইবে না; এবং পৃথিবীর বিনাশার্থ জলপ্লাবন আর হইবে না। 12ঈশ্বর আরও কহিলেন, আমি তোমাদের সহিত ও তোমাদের সঙ্গী যাবতীয় প্রাণীর সহিত চিরস্থায়ী পুরুষপরম্পরার জন্য যে নিয়ম স্থির করিলাম, তাহার চিহ্ন এই। 13অামি মেঘে আপন ধনু স্থাপন করি, তাহাই পৃথিবীর সহিত আমার নিয়মের চিহ্ন হইবে। 14যখন আমি পৃথিবীর ঊর্দ্ধে মেঘের সঞ্চার করিব, তখন সেই ধনু মেঘে দৃষ্ট হইবে; 15তাহাতে তোমাদের সহিত ও মাংসময় সমস্ত প্রাণীর সহিত আমার যে নিয়ম আছে, তাহা আমার স্মরণ হইবে, এবং সকল প্রাণীর বিনাশার্থ জলপ্লাবন আর হইবে না। 16আর মেঘধনুক হইলে আমি তাহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিব; তাহাতে মাংসময় যত প্রাণী পৃথিবীতে আছে, তাহাদের সহিত ঈশ্বরের যে চিরস্থায়ী নিয়ম, তাহা আমি স্মরণ করিব। 17ঈশ্বর নোহকে কহিলেন, পৃথিবীস্থ সমস্ত প্রাণীর সহিত আমার স্থাপিত নিয়মের এই চিহ্ন হইবে।
নোহের তিন পুত্রের বিবরণ।
18নোহের যে পুত্রেরা জাহাজ হইতে বাহির হইলেন, তাঁহাদের নাম শেম, হাম ও যেফৎ; সেই হাম কনানের পিতা। 19এই তিন জন নোহের পুত্র; ইহাঁদেরই বংশ সমস্ত পৃথিবীতে ব্যাপ্ত হইল।
20পরে নোহ কৃষিকর্ম্মে প্রবৃত্ত হইয়া দ্রাক্ষাক্ষেত্র করিলেন। 21আর তিনি দ্রাক্ষারস পান করিয়া মত্ত হইলেন, এবং তাম্বুর মধ্যে বিবস্ত্র হইয়া পড়িলেন। 22তখন কনানের পিতা হাম আপন পিতার উলঙ্গতা দেখিয়া বাহিরে আপন দুই ভ্রাতাকে সমাচার দিল। 23তাহাতে শেম ও যেফৎ বস্ত্র লইয়া আপনাদের স্কন্ধে রাখিয়া পশ্চাৎ হাঁটিয়া পিতার উলঙ্গতা আচ্ছাদন করিলেন, পশ্চাদ্দিকে মুখ থাকাতে তাঁহারা পিতার উলঙ্গতা দেখিলেন না। 24পরে নোহ দ্রাক্ষারসের নিদ্রা হইতে জাগ্রত হইয়া আপনার প্রতি কনিষ্ঠ পুত্রের আচরণ অবগত হইলেন। 25আর তিনি কহিলেন,
কনান অভিশপ্ত হউক,
সে আপন ভ্রাতাদের দাসানুদাস হইবে।
26তিনি আরও কহিলেন,
শেমের ঈশ্বর সদাপ্রভু ধন্য;
কনান তাহার দাস হউক।
27ঈশ্বর যেফৎকে বিস্তীর্ণ করুন;
সে শেমের তাম্বুতে বাস করুক,
আর কনান তাহার দাস হউক।
28জলপ্লাবনের পরে নোহ তিন শত পঞ্চাশ বৎসর জীবৎ থাকিলেন। 29সর্ব্বশুদ্ধ নোহের নয় শত পঞ্চাশ বৎসর বয়স হইলে তাঁহার মৃত্যু হইল।

高亮显示

分享

复制

None

想要在所有设备上保存你的高亮显示吗? 注册或登录